Lenspedia Bangla Logo
  • কলকাতা
  • 30℃ Purba Bardhaman

“নেতাজী মেট্রো স্টেশনে আত্মহত্যার চেষ্টা, টলিগঞ্জ থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত গ্রিন লাইন পরিষেবা বন্ধ”

নেতাজী মেট্রো স্টেশনে এক ব্যক্তির আত্মহত্যার চেষ্টার জেরে গ্রিন লাইনের পরিষেবা ব্যাহত হয়। টলিগঞ্জ থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত মেট্রো চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ থাকে, যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ে।

কলকাতার জনজীবনে মেট্রো রেল এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবহনব্যবস্থা, যা প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষের চলাফেরা নির্বিঘ্ন রাখে। অফিস টাইম হোক বা কলেজের ভিড়, শহরের বিভিন্ন প্রান্তকে দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্যভাবে যুক্ত রাখার জন্য মেট্রো রেলের ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু মাঝে মাঝে কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা এই পরিষেবার স্বাভাবিক গতিকে ব্যাহত করে দেয়। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে নেতাজী মেট্রো স্টেশনে, যখন এক ব্যক্তি হঠাৎই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। যার ফলে গ্রিন লাইনের পরিষেবা বড়সড়ভাবে বিঘ্নিত হয় এবং টলিগঞ্জ থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত মেট্রো চলাচল দীর্ঘক্ষণ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বাভাবিকভাবেই যাত্রাপথে নেমে আসে বিশৃঙ্খলা, অসুবিধা এবং যাত্রীদের মধ্যে উদ্বেগ।

ঘটনাটি ঘটেছিল ব্যস্ত সময়ে, যখন বহু মানুষ নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছানোর তাড়াহুড়োয় ছিলেন। নেতাজী স্টেশনে হঠাৎই প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের সামনে এক ব্যক্তি আচমকা লাইনের দিকে ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টা করেন। মেট্রো ট্রেন ওই মুহূর্তে ঢুকছিল স্টেশনে, ফলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা ছিল। তবে ট্রেন চালকের দক্ষতা এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়ার ফলে ট্রেনটি সময়মতো থেমে যায়। যদিও ওই ব্যক্তি আঘাতপ্রাপ্ত হন, কিন্তু বড়সড় বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়। ঘটনার পরই মেট্রো কর্তৃপক্ষ তৎপর হয়ে ওঠে এবং রেল সুরক্ষা বাহিনী সঙ্গে সঙ্গে প্ল্যাটফর্মের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নেয়। আহত ব্যক্তিকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। খবর পাওয়া গিয়েছে যে তাঁর অবস্থা উদ্বেগজনক হলেও চিকিৎসা চলছিল।

এই ঘটনার সরাসরি প্রভাব পড়ে পরিষেবার ওপর। যেহেতু প্ল্যাটফর্মে পুলিশ তদন্ত, ফুটেজ সংগ্রহ, ট্র্যাক পরিষ্কার এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা হয়েছিল, তাই গ্রিন লাইনের একাংশ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখতে হয়। টলিগঞ্জ থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত মেট্রো চলাচল থেমে যায়। বহু যাত্রী স্টেশনেই আটকে পড়েন। বিশেষত অফিসগামী মানুষ, পরীক্ষার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া ছাত্রছাত্রীরা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে থাকা যাত্রীদের জন্য পরিস্থিতি অত্যন্ত দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। কেউ বিকল্প পথ খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, কেউ অটোরিকশা বা বাসের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েন। অনেকে নিজের গন্তব্যে দেরি হওয়ায় মানসিক চাপের মুখোমুখি হন। কলকাতায় এমনিতেই ট্র্যাফিকের জট লেগেই থাকে; তার সঙ্গে মেট্রো পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যানজট আরও প্রকট হয়ে ওঠে।নেতাজী মেট্রো স্টেশনে এক ব্যক্তির আকস্মিক আত্মহত্যার চেষ্টাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকালে গ্রিন লাইনের পরিষেবা সম্পূর্ণভাবে ব্যাহত হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটে তখন, যখন ব্যস্ত সময়ে বহু যাত্রী স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন এবং মেট্রো ট্রেন স্টেশনে ঢুকছিল। ঠিক সেই মুহূর্তেই এক ব্যক্তি হঠাৎ লাইনের দিকে ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টা করেন। ট্রেন চালকের দ্রুত সিদ্ধান্ত এবং ব্রেক কষার ফলে বড়সড় দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়, তবে ওই ব্যক্তি আহত হন এবং তাঁকে তৎক্ষণাৎ স্থানীয় হাসপাতালে ভরতি করা হয়। মেট্রো কর্তৃপক্ষ এবং আরপিএফ দ্রুত প্ল্যাটফর্ম খালি করে তদন্ত শুরু করে, যার ফলে টলিগঞ্জ থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত পরিষেবা দীর্ঘক্ষণ বন্ধ রাখা হয়। যাত্রীদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক এবং বিভ্রান্তি ছড়ায়। অনেকেই বিকল্প পরিবহনের খোঁজে দৌঁড়াদৌড়ি শুরু করেন। এদিকে রাস্তার যানজটও বেড়ে যায়, কারণ দক্ষিণ কলকাতার এই অংশে মেট্রোই বহু মানুষের প্রধান পরিবহন। কিছু যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, এ ধরনের ঘটনা রোধে প্ল্যাটফর্মে নজরদারি আরও জোরদার করা উচিত। চিকিৎসকদের মতে, মানসিক চাপ বা ব্যক্তিগত সংকটের কারণে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে, তাই জনপরিসরে কাউকে দেখে সন্দেহ হলে সাহায্যের হাত বাড়ানো জরুরি। ঘটনার পরে পরিষেবা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়, তবে এই ঘটনা আবারও তুলে ধরল মেট্রোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতির প্রয়োজনীয়তা।

মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ করতে তারা নিয়মিত সচেতনতা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার চেষ্টা করছেন। প্ল্যাটফর্মে নজরদারি বাড়ানোর জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা বৃদ্ধি, নিরাপত্তারক্ষীদের উপস্থিতি বাড়ানো, মেট্রো চলাচলের সময় সতর্কতা অবলম্বন—সবই করা হচ্ছে। কিন্তু তবুও কলকাতা মেট্রোতে আত্মহত্যার প্রবণতা মাঝে মাঝে দেখা গেছে। নিরাপত্তাকর্মীরা মনে করছেন যে মনোরোগ সংক্রান্ত সমস্যার কারণে বা ব্যক্তিগত সংকটে এমন সিদ্ধান্ত বহু মানুষ নেন। যদিও জনসমক্ষে এমন ঘটনা ঘটলে তার প্রভাব শুধুমাত্র ব্যক্তির ওপর নয়, পুরো সমাজ এবং পরিবহন ব্যবস্থার ওপরে পড়ে।

যারা সেদিন মেট্রোতে যাতায়াত করছিলেন, তাদের বক্তব্য থেকে জানা যায় যে প্ল্যাটফর্মে হঠাৎই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় যখন যাত্রীরা দেখতে পান কেউ একজন লাইনে ঝাঁপ দিয়েছেন। অনেকে চিৎকার করেন, অনেকে দৌঁড়ে সরে যান। এমন পরিস্থিতিতে ট্রেন চালকের সিদ্ধান্ত ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি অল্প কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ট্রেন থামিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। যাত্রীরা জানিয়েছেন তাঁরা অনেকক্ষণ ধরে চিন্তায় ছিলেন কী ঘটেছে এবং কখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। যদিও মেট্রো কর্তৃপক্ষ দ্রুত ঘোষণা করে পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার কথা, কিন্তু যাত্রীরা জানান যে আরও দ্রুত এবং স্পষ্টভাবে যাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা গেলে সমস্যা কিছুটা কম হয়।

পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার ফলে মেট্রো স্টেশনের বাইরে পরিবহনের ওপর চাপ বেড়ে যায়। দক্ষিণ কলকাতার এই অঞ্চলে টলিগঞ্জ, নেতাজী, মাস্টারদা সুর্য্য সেন, গীতাঞ্জলি এবং শহিদ ক্ষুদিরাম—এই সমস্ত স্টেশন প্রতিদিন বিশাল সংখ্যক মানুষের যাতায়াতের কেন্দ্র। মেট্রো ছাড়াই এই যাত্রা অনেকের কাছে দুরূহ হয়ে পড়ে, বিশেষত যারা দূরবর্তী অফিস বা চাকরির জায়গায় পৌঁছাতে চান। এই ঘটনার ফলে বাসস্ট্যান্ড, অটোস্ট্যান্ড এবং ট্যাক্সির সামনে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। দুর্গাপুর ব্রিজ, গড়িয়াহাট, যোধপুর পার্ক, ঢাকুরিয়া—সব জায়গাতেই রাস্তার ওপর চাপ বাড়ে, ফলে স্বাভাবিক যানচলাচল দীর্ঘক্ষণ অনিয়মিত থাকে।

news image
আরও খবর

এমন ঘটনায় হাসপাতালের চিকিৎসকরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলেছেন যে মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যাগুলি অনেক সময়েই অদৃশ্য, কিন্তু মানুষের আচরণে ভয়ানক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই এই ধরনের পরিস্থিতিতে চিকিৎসা পরিষেবা এবং সমাজ দু’পক্ষকেই আরও সচেতন হতে হবে। আত্মহত্যার চেষ্টা করা ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসকেরা সবরকম চেষ্টা করছেন। তবে ঘটনাটি মনে করিয়ে দিচ্ছে যে মেট্রোর মতো জনপরিসরে কাউকে নজরদারি ছাড়া সম্পূর্ণ নিরাপদ রাখা কঠিন।

মেট্রো কর্তৃপক্ষের একাংশ জানিয়েছেন যে পরিষেবা পুনরায় শুরু করতে কিছুটা সময় লেগেছে কারণ ট্র্যাক পরীক্ষা, সিগন্যাল সিস্টেম যাচাই এবং ট্রেনটির মেকানিক্যাল পরিদর্শন প্রয়োজন ছিল। নিরাপত্তা সহ নিশ্চিত হওয়ার পরে পরিষেবা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়। পরিষেবা স্বাভাবিক হওয়ার পরে যাত্রীরা স্বস্তি পান, তবে অধিকাংশই মানছেন যে এমন পরিস্থিতি বারবার হলে মেট্রো রেলের ওপর মানুষের আস্থায় আঘাত লাগবে। Kolkata Metro–র সুনাম বহু দিনের, তাই কর্তৃপক্ষও জানেন যে যাত্রীদের আস্থা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।

ঘটনার পর সোশ্যাল মিডিয়াতেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন, অনেকে কড়া ভাষায় নিরাপত্তার অভাব নিয়ে সমালোচনা করেন। আবার অনেকেই মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আত্মহত্যা প্রবণ ব্যক্তিদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আরও আলোচনা শুরু করেছেন। কেউ কেউ লিখেছেন যে প্রয়োজন হলে মেট্রো স্টেশনে “হেল্পলাইন বোর্ড” লাগানো উচিত, যেখানে আত্মহত্যা প্রতিরোধ হেল্পলাইনের নম্বর থাকবে। অনেক দেশেই মেট্রো প্ল্যাটফর্মে এমন বোর্ড থাকে, যা শেষ মুহূর্তে কাউকে সিদ্ধান্ত পাল্টাতে সাহায্য করে।

এমন ঘটনার পর সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলছেন—কলকাতা মেট্রোতে প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর (PSD) লাগানো হবে কি? মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে নতুন করিডোরগুলিতে (যেমন পূর্ব-পশ্চিম মেট্রো) প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর স্থাপনের কাজ চলছে। কিন্তু পুরনো গ্রিন লাইনে এটি লাগানো প্রযুক্তিগতভাবে জটিল। তবে আলোচনা চলছে, ভবিষ্যতে পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

সার্বিকভাবে দেখা যাচ্ছে যে এই ঘটনা কেবল একটি দুর্ঘটনার সংবাদ নয়, বরং শহরের পরিবহন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, মনোরোগ সম্পর্কিত সচেতনতা এবং মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। কলকাতার মতো ব্যস্ত শহরে প্রতিদিনই হাজারো মানুষ নানা চাপ, দুশ্চিন্তা এবং সংকটের মধ্যে দিয়ে পথ চলেন। এমন পরিস্থিতিতে জনপরিসরে নিরাপত্তা শুধু কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব নয়, সমাজেরও দায়িত্ব। কারও অবস্থা বুঝে সহায়তা করা বা প্রয়োজনীয় সময়ে সাহায্যের হাত বাড়ানো অনেক বড় বিপদ আটকাতে পারে।

নেতাজী মেট্রো স্টেশনে আত্মহত্যার চেষ্টার এই ঘটনা আবার মনে করিয়ে দিল যে আমরা সকলেই একটু বেশি সতর্ক ও সংবেদনশীল হলে, অনেক বড় দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব। মেট্রো কর্তৃপক্ষ পরিষেবা পুনরুদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে—এটি স্বস্তির। তবে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে আরও প্রযুক্তিগত এবং মানসিক স্বাস্থ্যভিত্তিক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন—এমনটাই মনে করছে শহরের 

Preview image