Lenspedia Bangla Logo
  • কলকাতা
  • 30℃ Purba Bardhaman

আমি বাবার সাহায্যে কাজ পাইনি নেপোটিজম অভিযোগে শাহিদ কাপুরের স্পষ্ট জবাব

বলিউড অভিনেতা শাহিদ কাপুর তাঁর সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে নেপোটিজম বা পারিবারিক পরিচিতির ভিত্তিতে সুযোগ পাওয়ার অভিযোগ স্পষ্টভাবে নাকচ করেছেন। বলিউডহাঙ্গামাকে দেওয়া এক সরাসরি বক্তব্যে তিনি বলেন আমি কখনও আমার বাবার সাহায্য নিইনি, আর তিনি কখনও আমার জন্য কারও কাছে ফোন করেননি। তাঁর বাবা পঙ্কজ কপূর জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা হলেও শাহিদের দাবি, তিনি তাঁর ক্যারিয়ারের শুরুতে কোনো বিশেষ সুবিধা পাননি। বরং তিনি জানিয়েছেন, ছোটবেলায় তিনি বাবার সঙ্গে থাকতেন না, ফলে ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর পরিচিতিও স্বাভাবিকভাবেই সীমিত ছিল।

আমি বাবার সাহায্যে কাজ পাইনি”— শাহিদ কাপুরের নেপোটিজম-অভিযোগের জবাব, বলিউডে নতুন বিতর্কের ঝড়

বলিউডের জনপ্রিয় ও প্রতিভাবান অভিনেতা শাহিদ কাপুর আবারও আলোচনার কেন্দ্রে। সম্প্রতি একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি নেপোটিজম বা পারিবারিক পরিচিতির ভিত্তিতে সুযোগ পাওয়ার অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁর ভাষায়,
“আমি কখনও আমার বাবাকে ফোন করতে বলিনি, তিনি কখনও কারও কাছে আমার জন্য ফোন করেননি। আমি নিজের চেষ্টাতেই কাজ পেয়েছি।”
এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার সঙ্গে সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়া, বিনোদন জগত, পপ-কালচার বিশ্লেষক ও দর্শকদের মধ্যে শুরু হয়েছে তীব্র আলোচনা।

বলিউডে ‘নেপোটিজম’ শব্দটি গত এক দশকে অন্যতম বিতর্কিত শব্দে পরিণত হয়েছে। সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু-পরবর্তী সময় থেকে এই আলোচনা আরও বিস্তৃত হয়। বলা হয়—বলিউডের দরজা তথাকথিত ‘স্টার কিড’দের জন্য খোলা থাকে, যারা বিখ্যাত বাবা-মায়ের সুপারিশেই সুযোগ পেয়ে যান। এরকম অভিযোগের মধ্যেই শাহিদ কাপুরকে নিয়ে বহুজনের মন্তব্য—তিনি নাকি “স্টার কিড” সুবিধা ভোগ করেছেন কারণ তাঁর বাবা বিখ্যাত অভিনেতা পঙ্কজ কপূর।

কিন্তু শাহিদের বক্তব্য সম্পূর্ণ ভিন্ন গল্প বলে।
এই দীর্ঘ প্রতিবেদনে রয়েছে—তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, ইন্ডাস্ট্রির অভ্যন্তরীণ বাস্তবতা, নেপোটিজম বিতর্ক, দর্শকদের প্রতিক্রিয়া, শাহিদের ক্যারিয়ার যাত্রা, এবং এই ঘটনার প্রভাব বলিউডের বিস্তৃত আলোচনায়।
 

শাহিদ তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথম দিকের সংগ্রামের কথাও তুলে ধরেন। নাচের দলে ব্যাকগ্রাউন্ড ডান্সার হিসেবে কাজ করা, অসংখ্য অডিশনে বাদ পড়া, বিজ্ঞাপন ও মিউজিক ভিডিওতে সুযোগ খোঁজা—এই সবই ছিল তাঁর শুরু। Aryans ব্যান্ডের “Aankhon Mein Tera Hi Chehra” ভিডিওতে অভিনয় থেকেই তাঁর ক্যারিয়ার প্রথম আলো পায়। এরপর Ishq Vishk, Vivah, Jab We Met, Haider, Kaminey এবং সাম্প্রতিক Kabir Singh ও OTT সিরিজ Farzi—এসব কাজের মাধ্যমে তিনি নিজের প্রতিভা ও সক্ষমতা প্রমাণ করেছেন।

নেপোটিজম প্রসঙ্গে শাহিদের মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে। অনেকেই বলছেন—তিনি সত্যিই “self-made”, কারণ তাঁর কোনো বড় ব্যানার লঞ্চ ছিল না, কিংবা কোনো প্রযোজক-পরিচালক পরিবারের ঘনিষ্ঠতা থেকেও তিনি সুবিধা পাননি। অন্যদিকে কিছু দর্শক মনে করছেন—তিনি ‘স্টার কিড’, তাই পরিচিতি থাকা মানেই কিছু সুবিধা পাওয়া স্বাভাবিক। তবে শাহিদের বক্তব্য অনুযায়ী, তাঁর সাফল্য এসেছে তাঁর নিজস্ব পরিশ্রম, ধৈর্য ও প্রতিভার ভিত্তিতে।

বিনোদন জগতে নেপোটিজম বিতর্ক বহু বছরের। কারিনা কাপুর, আলিয়া ভট্ট, বরুণ ধাওয়ান—অনেক তারকাই এই প্রশ্নের মুখে পড়েছেন। শাহিদের এই সংযত ও যুক্তিভিত্তিক উত্তর নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি একাধিকবার জানিয়েছেন—“আমি যা পেয়েছি, নিজের জোরেই পেয়েছি। আমার বাবা কখনও আমার ক্যারিয়ারে হস্তক্ষেপ করেননি।”

শাহিদ কাপুর আজ বলিউডের অন্যতম শক্তিশালী অভিনেতা। তাঁর বক্তব্য নেপোটিজম বিতর্কে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে এবং প্রমাণ করেছে—স্টার কিড হওয়া মানেই সহজ পথ নয়; প্রতিভা, অধ্যবসায় ও সময়মতো সঠিক কাজই একজন অভিনেতাকে প্রতিষ্ঠিত করে।


শুরু থেকে কঠিন পথ — শাহিদ ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে থাকেননি

শাহিদ কাপুর সবার সামনে সৎভাবে বলেছেন—
“বেশিরভাগ মানুষ মনে করে আমি অভিনেতা হয়েছি কারণ আমি পঙ্কজ কপূরের ছেলে। কিন্তু আমি ছোটবেলা থেকে তাঁর সঙ্গে থাকিনি। আমার বড় হওয়াটাই আলাদা পরিবেশে।”

এই মন্তব্যের মধ্যেই লুকিয়ে আছে এক অজানা গল্প।
শাহিদের বয়স যখন খুবই ছোট, তখন তাঁর বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়। মা নীলিমা আজিম তাঁকে মানুষ করেন। জীবনের প্রথম অনেক বছর তিনি তাঁর বাবার সঙ্গে থেকেও না; ফলে সেই পরিচিতির মাধ্যমে কাজ পাওয়ার প্রশ্নই আসে না। ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর বাবার বড় পরিচিতি থাকলেও, শাহিদের কৈশোরকালেই কোনো ‘লবি’ বা ‘গডফাদার’ ছিল না।

অভিনয়ের জগতে নিজেকে প্রমাণ করতে তাঁকে নাচ শিখতে হয়েছে, শরীরচর্চা করতে হয়েছে, ছোট ছোট বিজ্ঞাপনে কাজ করতে হয়েছে, এবং নানান অডিশনে সুযোগ না পেয়ে ফিরে আসতে হয়েছে।

ইন্ডাস্ট্রি—যেখানে প্রতিদিন হাজারো নতুন মুখ কাজ খুঁজতে আসে, সেখানে একটি মুখ তখনই দেখা যায় যখন সে নিজেকে প্রমাণ করতে পারে।


বলিউডে আগমনের আগের সংগ্রাম — শাহিদের অডিশন জার্নি

অনেকেই জানেন না, শাহিদ কাপুর শুরু করেছিলেন নৃত্যশিল্পী হিসেবে।
তিনি বিখ্যাত নাচের গুরু শামাক দাভরের ট্রুপের সদস্য ছিলেন। এখানেই তিনি ব্যাকগ্রাউন্ড ডান্সার হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন।
ইন্ডাস্ট্রি তাঁকে সেই নৃত্যদলের একজন “সাধারণ ছেলে” হিসেবেই চিনত।

তিনি অডিশন দিতেন—কখনও বিজ্ঞাপনের জন্য, কখনও মিউজিক ভিডিওর জন্য, কখনও ফিল্মের ছোট রোলে।
অনেক সময় তাঁকে বলা হতো—“তুমি খুব চিকন”, “তোমাকে ক্যামেরায় ভালো লাগছে না”, “নতুন ফেস নেওয়ার পরিকল্পনা নেই”।

কিন্তু অভিনেতা হওয়ার ইচ্ছা এতটাই দৃঢ় ছিল যে তিনি হাল ছাড়েননি।
বিপাশা বসুর সঙ্গে Pepsi বিজ্ঞাপন, Aryans ব্যান্ডের “Aankhon Mein Tera Hi Chehra” ভিডিও—এসবই তাঁর প্রথম বড় সুযোগ তৈরি করে।


“বাবা কখনও ফোন করেননি”— শাহিদের স্পষ্ট মন্তব্য

শাহিদ বলেছেন—
“আমার বাবা আমার জন্য কখনো কাউকে ফোন করেননি। কখনো কারও কাছে বলেননি—‘এই ছেলেটাকে নাও’।
আমি যা পেয়েছি, নিজের চেষ্টায় পেয়েছি।”

বলিউডহাঙ্গামার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে—এই বক্তব্য তিনি দৃঢ়ভাবে দিয়েছেন।
কারণ অনেক সাংবাদিক তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন—
“আপনি কি নেপোটিজমের সুবিধাভোগী?”

তিনি বিরক্ত হলেও শান্তভাবে জবাব দিয়েছিলেন—
তিনি বাবার থেকে কোনো প্রভাব বা বিশেষ সুবিধা পাননি।


Pankaj Kapur নিজেই বলেছেন—“ওর সাফল্য ওর নিজের”

পঙ্কজ কপূর একাধিকবার সাক্ষাৎকারে বলেছেন—
“শাহিদের সাফল্য ওর নিজের। আমি কখনো ওকে সুযোগ করে দিইনি। ও নিজে নিজের রাস্তা বানিয়েছে।”

news image
আরও খবর

বলিউডের একজন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা হিসেবে পঙ্কজ কপূর তাঁর কাজ নিয়ে খুবই খুঁতখুঁতে।
তাই অনেকেই মনে করেন—যদি শাহিদ বাবার সাহায্য চাইতেনও, তাঁর বাবা হয়তো তাঁকে সাহায্য করতেন না, কারণ তিনি ‘সুযোগ নয়—যোগ্যতা’কে গুরুত্ব দেন।


শাহিদের ক্যারিয়ার—প্রথম সাফল্য থেকে আজ পর্যন্ত

Ishq Vishk (2003)

এই ছবির মাধ্যমেই শাহিদ কাপুর বলিউডে ঝড় তোলেন।
ছবিতে তাঁর অভিনয়, লুক, নাচ—সবই তরুণদের মধ্যে দারুণ জনপ্রিয় হয়।

Vivah, Jab We Met–এর উত্থান

২০০৬-এর Vivah তাঁকে ‘ফ্যামিলি হিরো’ বানায়।
২০০৭-এর Jab We Met তাঁকে সমালোচক এবং দর্শক—দু’পক্ষেরই তারকা বানায়।

তবে এই সাফল্য হঠাৎ আসেনি—এর পেছনে ছিল বছর বছরের পরিশ্রম।


নেপোটিজম বিতর্ক—বলিউডের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও বাস্তবতা

বলিউডে সুযোগ পাওয়ার দুটি পথ—
একটি হলো পরিবার/পরিচিতি,
অন্যটি হলো যোগ্যতা/সংগ্রাম

অনেক তারকার সন্তান দ্রুত সুযোগ পান—এ বিষয়টি অস্বীকারের উপায় নেই।
তবে শাহিদের দাবি—
তাঁকে কখনও ‘স্টার কিড’ সুবিধা দেওয়া হয়নি।

দর্শকের মধ্যেও এই বিষয়ে দ্বিধা।
অনেকে মনে করেন—তিনি সুবিধা পাননি
আবার কেউ মনে করেন—তাঁর পরিচিতি তাকে সাহায্য করতে পারতো

কিন্তু বাস্তবতা হলো—শাহিদ তাঁর প্রথম দিকের জীবনে বাবার সঙ্গে থাকেননি।
তাই ইন্ডাস্ট্রির ‘স্টার কিড সার্কিট’-এ তিনি ছিলেন না।


সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্ক—সমর্থক বনাম সমালোচক

শাহিদের বক্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় দুটি ধারা তৈরি হয়—
একটি ধারা তাঁকে সমর্থন করে বলেছে—
“Shahid is truly self-made.”
আরেকটি ধারা তাঁকে প্রশ্ন করেছে—
“তুমি পঙ্কজ কপূরের ছেলে—এটাই যথেষ্ট পরিচিতি, এটাই সুবিধা।”

তবে শাহিদের ভক্তরা মনে করেন—
কেউ ‘স্টার কিড’ হলেই যে সব সুবিধা পাওয়া যায়, তা সব সময় সত্যি নয়।

অনেকে লিখেছেন—
“Shahid had no big-banner launch. He struggled for years.”


বিনোদনমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া—এই বক্তব্যের গুরুত্ব কী?

এই বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ—
বলিউডে নেপোটিজম ইস্যু বহু বছর ধরে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু।
কারিনা কাপুর খান থেকে বরুণ ধাওয়ান—কেউই এই প্রশ্ন এড়াতে পারেননি।
অনেক তারকা এই প্রশ্নে রেগে যান।
শাহিদ কিন্তু শান্তভাবে ও যুক্তি দিয়ে উত্তর দিয়েছেন।

তাঁর এই অবস্থান বলিউডে একটি স্বাস্থ্যকর বার্তা দেয়—
“যোগ্যতা থাকলে সুযোগ আসবেই।”


শাহিদের পরবর্তী ক্যারিয়ার—আজ তিনি কোথায়?

২০২৫ সালে শাহিদ কাপুর বলিউডের অন্যতম শক্তিশালী অভিনেতা।
OTT প্ল্যাটফর্মে তাঁর Farzi দারুণ জনপ্রিয়।
Kabir Singh বক্স অফিস কাঁপিয়েছে।
Haider, Kaminey তাঁর অভিনয়কে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

এই সবই এসেছে প্রতিভা, কঠোর পরিশ্রম ও দীর্ঘ পথ চলার মাধ্যমে।


উপসংহার—শাহিদের বক্তব্য কি নেপোটিজম বিতর্ক থামাবে?

বলিউডের নেপোটিজম বিতর্ক হয়তো কখনও থামবে না।
কারণ হাজারো প্রতিভা বলিউডে সুযোগ না পেয়ে ফিরে যান।
সেই দুঃখ, ক্ষোভ, অসমতা—সবই রয়েছে।

কিন্তু শাহিদের গল্প বলছে—
সবার জন্য একই পথ নয়।
কেউ পরিবার থেকে সুবিধা পায়,
আবার কেউ পরিবার থাকা সত্ত্বেও সুবিধা পায় না।

শাহিদ কাপুরের বক্তব্য একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়ে যায়—
ইন্ডাস্ট্রিতে জায়গা বানাতে হলে পরিচিতি নয়,
প্রতিভা, কঠোর পরিশ্রম আর ধারাবাহিকতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

Preview image