ব্রেন স্ট্রোকের মতো লক্ষণ না দেখালেও ছোট ছোট সমস্যার মাধ্যমে হয়ে যেতে পারে ‘সাইলেন্ট স্ট্রোক’। সচেতন না হলে ঝুঁকি সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না।
সাইলেন্ট স্ট্রোক: নিঃশব্দে হানা দেয়, লক্ষণ সহজে বোঝা যায় না
সাধারণ ব্রেন স্ট্রোকের মতো শরীরের এক দিক অসাড় হয়ে যাওয়া, মুখ বেঁকে যাওয়া বা আচমকা স্মৃতিলোপের মতো লক্ষণ ‘সাইলেন্ট স্ট্রোক’-এ দেখা যায় না। রোগী প্রাথমিকভাবে বুঝতে পারেন না, তার শরীরে কী ধরনের পরিবর্তন ঘটছে। প্রতিদিনের ব্যস্ততায় ছোটখাটো শারীরিক সমস্যাগুলো ভেবে এড়িয়ে যাওয়ার কারণে, কয়েক মাস পরে এক বড়সড় স্ট্রোকের ধাক্কা আসে, যা বিপজ্জনক। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, সাইলেন্ট স্ট্রোক একটি নিঃশব্দ ঘাতক। এটি বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা গেলেও, বর্তমানে কমবয়সিরাও আক্রান্ত হচ্ছেন।
সাইলেন্ট স্ট্রোক তখন ঘটে যখন মস্তিষ্কের কোষ যথেষ্ট অক্সিজেন পান না। যদি রক্তবাহী ধমনী সরু হয়ে যায় বা রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়, মস্তিষ্কের কোষ নিস্তেজ হয়ে যায় এবং সঙ্কেত পাঠাতে সক্ষম থাকে না। ফলে রোগীর মধ্যে বারে বারে ভুলে যাওয়া, বিভ্রান্তি, মেজাজের হঠাৎ পরিবর্তন এবং দৃষ্টি ঝাপসা হওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। শরীরের ভারসাম্যও বিগড়ে যেতে পারে, হাঁটাচলার সময় পড়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়, ক্লান্তি বাড়ে এবং রাতে ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়। অনেক সময় রোগীদের এই লক্ষণগুলো ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিনাশের সমস্যা ভেবে ভুল ধারণা হয়।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাইলেন্ট স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি থাকে যাদের রক্তচাপ অত্যধিক, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নেই, হার্টের অসুখ আছে, কোলেস্টেরল ওঠানামা করে, অতিরিক্ত ওজন রয়েছে বা যাঁরা বেশি ধূমপান ও অ্যালকোহল গ্রহণ করেন।
প্রতিরোধের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম:
১) ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা।
২) বয়স পঞ্চাশোর্ধ্ব হলে রক্তচাপ ১৪০–৯০-এর মধ্যে রাখা, বেশি হেরফের হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।
৩) পর্যাপ্ত জল খাওয়া, অতিরিক্ত বা খুব কম জল এড়ানো।
৪) দিনে অন্তত আধ ঘণ্টা হাঁটাহাঁটি বা হালকা যোগাসন।
৫) ধূমপান ও মদ্যপান এড়ানো, প্রক্রিয়াজাত খাবার ও নরম পানীয় খাওয়া সীমিত করা।
এই নিয়মগুলো মেনে চললে সাইলেন্ট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো সম্ভব এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য রক্ষা করা যায়।
