বিহার নির্বাচনকে ঘিরে রাজ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে। বিভিন্ন দল জোট–বদল, প্রতিশ্রুতি ও জনসমর্থন অর্জনে মরিয়া হয়ে প্রচারে নামছে। ভোটারদের সিদ্ধান্ত কোন দিকে যাবে, আর কার হাতে উঠবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব—তা নিয়ে জোর জল্পনা চলছে রাজনৈতিক মহলে
বিহার ভারতের রাজনৈতিক মানচিত্রে এক বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে রাজ্যের রাজনীতি শুধু স্থানীয় পর্যায়ে নয়, বরং জাতীয় অঙ্গনেও প্রভাব বিস্তার করেছে। সামাজিক ন্যায়, দলিত রাজনীতি, সাম্প্রদায়িক সমীকরণ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, শিক্ষার বিস্তার—এই সবই বিহারের রাজনৈতিক গল্পের অংশ। প্রতি নির্বাচনে এই রাজ্য যেন নতুন করে কেন্দ্রীয় আলোয় উঠে আসে। আর তাই বিহার নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনা, কৌতূহল ও রাজনৈতিক গরম হাওয়া সবসময়ই দেশজুড়ে চর্চার বিষয়।
এই নির্বাচনের আগে রাজ্যজুড়ে যে মাত্রার উত্তাপ তৈরি হয়েছে, তা শুধু ভোটের হিসেবেই সীমাবদ্ধ নয়। জোট রাজনীতির অস্থিরতা, বিভিন্ন দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব, রাজনৈতিক নেতাদের দিক পরিবর্তন, উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি, বেকারত্বের সমস্যা, দুর্নীতি বিরোধী স্লোগান—সব মিলিয়ে বিহার এক জটিল রাজনৈতিক সমীকরণের মধ্য দিয়ে এগোচ্ছে। এবারের ভোটে কে জিতবে, সরকার কার হাতে গড়বে, এবং বিহারের ভবিষ্যৎ কোন পথে যাবে—এ সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ভোটারদের তীব্র নজর রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে।
বিহারের রাজনৈতিক ইতিহাস দেখলে বোঝা যায়, এখানে ভোটবিভাজনের প্রধান ভিত্তি—জাতপাত, ধর্ম, আঞ্চলিকতা এবং উন্নয়ন। গত কয়েক দশকে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং অবকাঠামোগত পরিবর্তন রাজ্যে কিছুটা অগ্রগতি ঘটালেও, দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং শিক্ষার মান–সংক্রান্ত সমস্যা এখনও গভীর। তাই প্রতিটি দলের নির্বাচনী প্রচার ও প্রতিশ্রুতিতে এই বিষয়গুলোই বড় করে উঠে আসে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের নিজস্ব উন্নয়ন মডেল দেখিয়ে মানুষের ভোট আকর্ষণের চেষ্টা করে।
রাজ্যের রাজনৈতিক ছবিকে যদি সাম্প্রতিক বছরের প্রেক্ষিতে দেখা যায়, তবে দেখা যাবে যে জোট রাজনীতি বিহারের প্রধান বৈশিষ্ট্য। এখানে এককভাবে কোনো দল খুব কমই সরকার গঠন করতে পারে। নানা সামাজিক গোষ্ঠীর সমর্থন পেতে এবং রাজনৈতিক সমীকরণ সামাল দিতে জোটবদ্ধ রাজনীতি বিহারের রাজনীতিকে গতিশীল করেছে। কখনও এনডিএ, কখনও মহাগঠবন্ধন, কখনও নতুন আঞ্চলিক দল—এই সবের জটিল মেলবন্ধন রাজ্যের ভোটের ট্রেন্ড তৈরি করে।
এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় নজর রয়েছে তিনটি স্তরে—প্রথমত জোট রাজনীতি কী রূপ নেবে, দ্বিতীয়ত তরুণ ভোটারদের ভূমিকা কেমন হবে, তৃতীয়ত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রতিশ্রুতি কতটা বাস্তবায়নযোগ্য। বিহারের যুবসমাজ রাজনীতির বড় চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে। রাজ্যে বেকারত্বের হার জাতীয় গড় থেকে বেশি হওয়ায় তরুণদের মধ্যে ক্ষোভ আছে, আবার পরিবর্তনের প্রত্যাশাও আছে। তারা যে দিকে যাবে, সেই দিকে ফলাফলও অনেকটাই ঝুঁকতে পারে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—বিহারের ভোটের কেন্দ্রে সবসময়ই সামাজিক ন্যায় এবং সমতা বড় ইস্যু। সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণি, দলিত, মহাদলিত, ওবিসি এবং মুসলিম ভোটের উপরই অনেকটা নির্ভর করে রাজনৈতিক দলগুলোর জয়ের সম্ভাবনা। প্রতিটি দল এই শ্রেণিদের কাছে নিজেদের পক্ষের হাওয়া তুলতে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি, সামাজিক নিরাপত্তা, উন্নয়ন প্রকল্প ও কল্যাণমূলক স্কিমের কথা বলছে। ফলে নির্বাচনের ইস্যু শুধু উন্নয়নের মধ্যেই আটকে নেই, বরং সামাজিক ন্যায়ের বিবেচনাও সমানভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে।
বিহারের গ্রামীণ ভোটাররাই ফলাফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখে। রাজ্যের অধিকাংশ জনসংখ্যা গ্রামভিত্তিক হওয়ায় কৃষি, সেচ, রাস্তা, পানীয় জল, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষার মান—এসবই গ্রামের মানুষের প্রধান চাহিদা। এসব বিষয়কে কেন্দ্র করেই রাজনৈতিক দলগুলোর প্রচারও জোরদার হয়েছে। শহরাঞ্চলে আবার অবকাঠামো উন্নয়ন, নিরাপত্তা, শিল্পায়ন এবং আধুনিক শিক্ষার দাবি জোরালো।
রাজ্যের নির্বাচনে নারীদের ভোটও এবার গুরুত্বপূর্ণ। বিহারে মহিলা ভোটারদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে এবং তাঁরা এখন নির্বাচনী রাজনীতিতে একটি শক্তিশালী ভোট ব্লক। বিভিন্ন দল নারী নিরাপত্তা, আর্থিক সহায়তা, স্বাস্থ্য, মাতৃত্বকালীন সুবিধা এবং ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্প তুলে ধরছে তাঁদের আকৃষ্ট করতে। ফলে নারী ভোট কী দিকে যাবে, তা নির্বাচন ফলাফলেও গভীর প্রভাব ফেলবে।
এছাড়া ধর্মীয় সমীকরণ বিহারের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হলেও সম্প্রতি সমাজে উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের প্রশ্ন বড় হয়ে উঠেছে। ভোটাররা বিশেষ করে চান—ভাল রাস্তা, ভাল হাসপাতাল, পানীয় জল, স্মার্ট শহর, এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ। তাই এবারের নির্বাচনে উন্নয়নমুখী প্রতিশ্রুতি এবং বাস্তব কাজের হিসাবেই ভোটারদের মন দোদুল্যমান।
রাজ্যের নির্বাচনে বড় বড় নেতাদের বক্তৃতায় যেমন উত্তেজনা ছড়ায়, তেমনই গ্রামীণ ঘরোয়া বৈঠক—যা বিহারের নির্বাচনী সংস্কৃতির একটি অংশ—সেখানেও তীব্র রাজনৈতিক আলোচনা হয়। প্রতিটি পঞ্চায়েত, প্রতিটি ব্লক, প্রতিটি শহর কেন্দ্রে এখন যেন রাজনীতি নিয়ে উত্তেজনা চরমে।
দলগুলোর নির্বাচনী প্রচারে এবার বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে প্রযুক্তি, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ডিজিটাল ক্যাম্পেইনিং। তরুণদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন দল অনলাইন প্রচারের দিকে ঝুঁকছে। এক সময়ে যেখানে বিহারের নির্বাচন মানেই ছিল বিশাল জনসভা, সেখানে এখন ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ—এসবও সমানভাবে ভোটের ময়দান তৈরি করে ফেলেছে। ডিজিটাল প্রচার মানুষকে দ্রুত তথ্য দেয়, ভুল তথ্যও ছড়াতে পারে—ফলে এই ক্ষেত্রটিও তীক্ষ্ণ নজরে।
এছাড়া নির্বাচন কমিশনের কঠোর অবস্থানও এবারের ভোটকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। ভোটের সময় শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রশাসন, আধাসামরিক বাহিনী, পুলিশ এবং পর্যবেক্ষক দল সম্পূর্ণ প্রস্তুত। ন্যায্য নির্বাচনই জনগণের সঠিক মতামত তুলে ধরতে পারে—এটাই নির্বাচন কমিশনের প্রধান বার্তা।
এবারের ভোটে কারা এগিয়ে থাকবে, তা এখনই বলা কঠিন। কোনো দলই শতভাগ দাবি করতে পারছে না। বিশ্লেষকরা বলছেন যে এই নির্বাচন হবে ত্রিমুখী লড়াইয়ের। জোট রাজনীতির ওঠাপড়া, প্রভাবশালী নেতাদের অবস্থান, তরুণ ভোটের धারা—সব মিলিয়ে নির্বাচনের ফলাফল হবে অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ।
সব মিলিয়ে বিহার নির্বাচন শুধু ভোটের খেলা নয়—এটি সমাজ–অর্থনীতি–রাজনীতির বড় এক আয়না। বিহারের মানুষ স্বপ্ন দেখে উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতার। এবার তারা সেই স্বপ্ন কোন দলের হাতে তুলে দেবে—তা জানার অপেক্ষায় দেশ।
বিহার নির্বাচনের ফল শুধু সরকারের বদল নয়, বরং রাজ্যের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশও নির্ধারণ করবে। ভোট শেষ হবে, মঞ্চের আলো নিভে যাবে, নেতাদের বক্তৃতা থামবে—কিন্তু মানুষের চোখে যে প্রত্যাশা, তার জবাব দিতে হবে নতুন সরকারকে। বিহারের আগামী পথ কোন দিকে যাবে, তা নির্ভর করছে প্রতিটি ভোটারের সিদ্ধান্তের
বিহার নির্বাচন যখন সামনে আসে, তখন শুধু রাজ্যের ভৌগোলিক সীমাতেই রাজনৈতিক উত্তাপ আটকে থাকে না; এর প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। কারণ এই নির্বাচন ভারতের বৃহত্তর রাজনৈতিক ভবিষ্যতের দিক নির্দেশ করে। অতীতে বহুবার দেখা গেছে, বিহারের ভোটের ফল বিভিন্ন জাতীয় জোটকে শক্তি যুগিয়েছে বা দুর্বল করেছে। তাই এবারের ভোটে প্রতিটি দলই সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমেছে।
এবারের নির্বাচনের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হলো মুখ্যমন্ত্রী পদের লড়াই। কে এই আসনে বসবেন—এ নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। বহু বছর ধরে যে নেতৃত্ব বিহারকে পরিচালনা করেছে, তার চ্যালেঞ্জ করছে নতুন প্রজন্মের নেতৃত্ব। অভিজ্ঞতা বনাম নতুন দৃষ্টিভঙ্গির এই লড়াই ভোটারদের কাছে বিশেষ আকর্ষণের বিষয় হয়ে উঠেছে। তরুণ ভোটাররা বিশেষ করে এমন নেতৃত্ব চান, যারা আধুনিক বিহার গড়তে সক্ষম। অন্যদিকে বয়স্ক ভোটাররা অনেক সময় স্থিতিশীলতা ও অভিজ্ঞ নেতৃত্বকে বেশি প্রাধান্য দেন। এই দুই প্রজন্মের ভোটের পার্থক্য এবারের ভোটের ফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবে।
বিহারের অবকাঠামোগত সমস্যা বহুদিনের। সড়ক যোগাযোগ উন্নত হলেও—বিশেষ করে জাতীয় সড়ক প্রকল্প সম্পূর্ণ হওয়ার পর—গ্রামীণ রাস্তাঘাটের এখনও অনেক উন্নয়ন বাকি। গ্রামীণ স্কুলগুলির মান, শিক্ষক সংকট, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অভাব, পানীয় জলের সমস্যা—এই বিষয়গুলো ভোটারদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ফলে নির্বাচনী প্রচারে প্রতিশ্রুতি হিসেবে এইগুলোই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। ভোটাররা শুধু প্রতিশ্রুতি শুনতে চান না; তারা বাস্তব কাজও দেখতে চান। তাই রাজনৈতিক দলগুলির প্রচার হচ্ছে কাজের রিপোর্টকার্ড ঘিরে।
রাজ্যের অর্থনীতিও একটি বড় ইস্যু। শিল্পায়নের হার কম হওয়ায় কর্মসংস্থান সংকট রয়েছে। বহু তরুণ অন্য রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন কাজের খোঁজে। পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা, কোভিড–পরবর্তী অর্থনৈতিক সংকট এবং মুদ্রাস্ফীতির কারণে মানুষের জীবনে চাপ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে দলগুলি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে শিল্প উত্থান, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও বিনিয়োগ আকর্ষণের। কিন্তু ভোটাররা প্রশ্ন তুলছেন—আসলেই কি এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন সম্ভব? তাদের চোখ এখন বাস্তব উন্নয়নের দিকে, শুধুই রাজনৈতিক বাগাড়ম্বরের দিকে নয়।
এবারের নির্বাচনে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও দুর্নীতি বিরোধী অবস্থানও আলোচনার বড় কেন্দ্রবিন্দু। রাজ্যের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প থেকে শিক্ষা ও চিকিৎসার মান পর্যন্ত সবকিছুতেই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ভোটারদের দাবি—স্বচ্ছ শাসনব্যবস্থা, দুর্নীতিমুক্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং সরকারি দপ্তরের জবাবদিহিতা। এর ফলে নির্বাচনে সুশাসন একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে নারী ভোটের দিকটি আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। বিহারে বিভিন্ন সমাজকল্যাণ কর্মসূচি যেমন—মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী, আর্থিক সহায়তা প্রকল্প, সাইকেল–স্কিম, স্কলারশিপ—নারীদের রাজনৈতিকভাবে সচেতন করেছে। তারা এখন ভোট দিতে আসে নিজের সিদ্ধান্তে, পরিবারের পুরুষদের প্রভাব ছাড়াই। এই বদল ভোটের গতিপথ বদলে দিতে পারে। এবারের নির্বাচনে নারীর নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন ও শিক্ষার প্রসার বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।
ধর্মীয় এবং জাতিগত সমীকরণ এখনও গুরুত্বপূর্ণ হলেও, নতুন প্রজন্মের ভোটারের কাছে উন্নত জীবনযাত্রা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তারা চায় আধুনিক প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ শিক্ষা ব্যবস্থা, উন্নত চিকিৎসা, নিরাপদ শহর, আধুনিক ট্রান্সপোর্ট ও বাণিজ্যিক সুযোগ। এই দৃষ্টিভঙ্গি বিহারের রাজনীতিতে নতুন স্রোত তৈরি করেছে।
রাজনৈতিক দিক থেকে দলগুলির অভ্যন্তরীণ অস্থিরতাও বড় ভূমিকা রাখছে। দল ছাড়ানো, জোট পরিবর্তন, নতুন নেতাদের উত্থান, স্থানীয় স্তরের অসন্তোষ—সবই রাজনৈতিক আন্দোলনের অংশ। এর প্রভাবে ভোটবিভাজন হয় এবং অনেক সময় নির্বাচনের ফলও বদলে যায়। বিশ্লেষকরা বলছেন, এবারের নির্বাচনে "প্রার্থী–নির্ভর" ভোট বড় ভূমিকা নেবে। অর্থাৎ ভোটাররা শুধু দলকে দেখে ভোট দেবেন না; দেখবেন স্থানীয় প্রার্থীর জনপ্রিয়তা, কাজ এবং জনসম্পৃক্ততা।
সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা এবারের নির্বাচনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দলগুলি লাইভ র্যালি, ডিজিটাল প্রচার, ভিডিও মেসেজ, ইনফ্লুয়েন্সার ক্যাম্পেইন ইত্যাদির উপর জোর দিচ্ছে। তরুণরা নিজেদের মতামত সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করছে। এর ফলে রাজনৈতিক প্রচারের জগৎ যেমন বদলেছে, ভোটারদের ভাবনাতেও পরিবর্তন এসেছে।
সর্বশেষ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—বিহারের মানুষ এখন এমন এক সরকার চান যা শুধু পাঁচ বছরের জন্য বড় বড় প্রতিশ্রুতি দেবে না, বরং বাস্তব উন্নয়ন করবে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, কৃষি, নারীর নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা—এই সব ক্ষেত্রেই দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন চাইছে মানুষ। রাজ্যকে আধুনিক ও সক্ষম করতে যে নীতি প্রয়োজন—সেটাই ভোটারদের মূল চাহিদা।
সব মিলিয়ে বিহার নির্বাচন শুধুমাত্র রাজনৈতিক লড়াই নয়, এটি মানুষের ভবিষ্যতের উপরে নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। কোন দল এই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে—তা বলা কঠিন। তবে একটাই স্পষ্ট—বিহারের ভোটাররা আগের চেয়ে আরও বেশি রাজনৈতিকভাবে সচেতন, দাবি–সম্পন্ন এবং বাস্তবমুখী। তারা পরিবর্তন চান, উন্নয়ন চান, এবং সেই স্বপ্ন পূরণ করবে এমন নেতৃত্বই তাঁদের মন জয় করবে।