Lenspedia Bangla Logo
  • কলকাতা
  • 30℃ Purba Bardhaman

বৃদ্ধা সূর্য কুমারী দেবনাথের আতঙ্ক: এসআইআর ফর্মের কারণে বৃদ্ধভাতা বন্ধ হওয়ার শঙ্কা

স্টোরি 4......এস আই আর এর কারণে বৃদ্ধ ভাতা বন্ধ হয়ে যাবার আতঙ্কে রয়েছে বৃদ্ধা...৮৫ বছর সূর্য কুমারী দেবনাথের ভোটার কার্ড তৈরি হয় ১৯৯৫ সালে, ১৯৯৫ সালের আগে থেকেই তিনি ভোট দিয়ে আছেন, ১৫-২০ বছর ধরে শ্যামগঞ্জ পাড়াতেই বসবাস করছেন, তিনি শ্যামগঞ্জ পাড়ার ভোটার, বৃদ্ধার ছেলেমেয়েরা কেউ তাকে দেখে না, তিনি কোন রকমে একটি ঘর ভাড়া করে থাকেন, সূর্য কুমারী দেবনাথের পরিবারের সবার নাম আছে ২০০২ এর ভোটার লিস্টে, শুধু তার একমাত্র নাম নেই। তাই তিনি এস আই আর এর আতঙ্কে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন, তার এখন একমাত্র সম্বল বলতে বৃদ্ধভাতা, এস আই আর ফম ফিলাপ করতে পারিনি বলে তিনি ভয় পাচ্ছেন, তার শেষ সম্বল বলতে একমাত্র বৃদ্ধ ভাতা, এস আই আর এর কারণে কোনভাবে যদি তার বৃদ্ধ ভাতাটা বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে তিনি অথৈ জলে পড়বেন, ১০০০ টাকা বৃদ্ধ ভাতাটা দিয়ে তিনি বাড়িভাড়া মেটান এবং খাওয়া দাওয়া করেন,পোনেরো কুড়ি বছর ধরে ছেলে মেয়েরা দেখেনে বৃদ্ধাকে, বাড়ি ভাড়া করে একাই থাকেন, আতঙ্কে খাওয়া দাওয়া এক প্রকার বন্ধ করে দিয়েছি বললে চলে, রাতের ঘুমও কেড়ে নিয়েছে এসআই আর আতঙ্কে, বৃদ্ধার মনে একটি ভীতিকাজ করছে যদি তাকে বাংলাদেশে কোনমতে পাঠিয়ে দেয় সেই চিন্তাতেই তিনি আস্তে আস্তে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, কালনা পৌরসভার উপ পৌরপতি তপন পোড়েল জানান পশ্চিমবঙ্গের হাজার হাজার মানুষ এছাড়া আতঙ্কে রয়েছেন, তাই কোন চিন্তা করার কারণ নেই কোন অসুবিধা হবে না

বৃদ্ধা সূর্য কুমারী দেবনাথের আতঙ্ক: এসআইআর ফর্মের কারণে বৃদ্ধভাতা বন্ধ হওয়ার শঙ্কা

শুভ্রপদে মানুষ যখন জীবনের শেষ অধ্যায়ে পৌঁছায়, তখন তারা এক ধরনের আর্থিক নির্ভরশীলতা এবং শারীরিক দুর্বলতার মধ্যে জীবন অতিবাহিত করেন। তাদের জন্য সবচেয়ে বড় আশ্রয় এবং সম্বল থাকে সরকার প্রদত্ত বৃদ্ধভাতা, যা তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অন্তর্ভুক্ত একমাত্র আর্থিক সহায়তা। কিন্তু এই বৃদ্ধভাতা, যা তাদের একমাত্র সম্বল হিসেবে রয়ে যায়, তা এক অজানা আতঙ্কের শিকার হয়ে উঠতে পারে, যখন নানা প্রশাসনিক জটিলতা এবং নথিপত্রের অভাবের কারণে তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।

সেই বৃদ্ধাদের মধ্যে একজন হলেন ৮৫ বছর বয়সী সূর্য কুমারী দেবনাথ, যিনি পশ্চিমবঙ্গের শ্যামগঞ্জ পাড়ায় দীর্ঘদিন ধরে বাস করছেন। তাঁর ভোটার কার্ড ১৯৯৫ সালে তৈরি হলেও, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে ভোট প্রদান করা সত্ত্বেও সম্প্রতি দেখা গেছে যে, তাঁর নাম ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এর ফলে, সূর্য কুমারী দেবনাথের কাছে সবচেয়ে বড় শঙ্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেটা হল এসআইআর ফর্মের ফিলাপ না করতে পারার কারণে তাঁর বৃদ্ধভাতা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আতঙ্ক।

সূর্য কুমারী দেবনাথের পরিবারের সকল সদস্যের নাম ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে ছিল, তবে তাঁর নাম সেখানে ছিল না। তার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়, কিন্তু সরকারি নথিপত্রের গরমিল এবং অনিয়মের কারণে তাঁর নামটি বাদ পড়ে যায়। এ অবস্থায়, এখন তিনি মনে করছেন যে, যদি তাকে এসআইআর ফর্ম ফিলাপ না করতে দেয়, তবে তিনি কি করে বৃদ্ধভাটা পাবেন? এই প্রশ্নটি তাকে প্রায় প্রতিদিনই দুঃশ্চিন্তা ও আতঙ্কের মধ্যে রাখে।

সূর্য কুমারী দেবনাথের পরিবারে তাঁর কোনো সন্তানের পক্ষ থেকে কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি। তাঁর ছেলেমেয়েরা কেউ তাকে দেখতে আসে না। তিনি একা একাই একটি ছোট ঘর ভাড়া করে থাকেন এবং জীবিকা নির্বাহের জন্য সরকারি বৃদ্ধভাতাই তার একমাত্র অবলম্বন। ১০০০ টাকার বৃদ্ধভাতা দিয়ে তিনি মাসের শেষে বাড়িভাড়া এবং খাওয়া-দাওয়া পরিচালনা করেন। এর বাইরেও, তার আর কোন আয়ের উৎস নেই। তার পরিবারের সদস্যরা তাকে কোনভাবেই দেখাশোনা করেন না, এবং একা একাই তিনি জীবনযাপন করছেন।

এ অবস্থায়, সূর্য কুমারী দেবনাথের চিন্তা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ যদি কোনোভাবে তার বৃদ্ধভাতা বন্ধ হয়ে যায়, তবে তাকে কোনরকমে জীবনযাপন করাও সম্ভব হবে না। তার মনে সবচেয়ে বড় শঙ্কা, যদি তাকে কোনোভাবে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে তিনি কোথায় যাবেন? এই আতঙ্কের মধ্যে তিনি রাত্রি-দিন অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হয়ে পড়েছেন এবং নিজের শারীরিক অবস্থারও অবনতি ঘটছে।

এসআইআর ফর্মের প্রক্রিয়া এবং তার সাথে সম্পর্কিত নথিপত্রের ভুলের কারণে, একদিকে তিনি বৃদ্ধভাতার জন্য অতিরিক্ত উদ্বেগে ভুগছেন, অন্যদিকে সমাজের প্রতি তার মনে এক প্রকার অসন্তোষও তৈরি হচ্ছে। সরকার এবং প্রশাসনের প্রতি তার আস্থা কমে গিয়েছে, কারণ তিনি মনে করেন যে তার নথি সঠিক না হওয়ার জন্য তিনি কোনোভাবে সাহায্য পাবে না। এর ফলে তার জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় কাঠামোর এই জটিলতা।

তবে, কালনা পৌরসভার উপ পৌরপতি তপন পোড়েল এই বিষয়ে একটি আশ্বাস প্রদান করেছেন। তিনি বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের হাজার হাজার মানুষ এই ধরনের আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন, কিন্তু তিনি নিশ্চিত করেছেন যে, এসআইআর ফর্ম ফিলাপ করার ক্ষেত্রে সরকার কোন রকম অসুবিধা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, "এটা একটা প্রশাসনিক প্রক্রিয়া। মানুষের পক্ষে যে সমস্ত তথ্য বা নথি অভাব রয়েছে, সেটি সংশোধন করে ফেলা সম্ভব।"

তপন পোড়েল আরও বলেন, “এই ধরনের আতঙ্কে ভুগে কোনো লাভ নেই। সকল মানুষের জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে, যাতে তারা প্রত্যেকে তাদের নথিপত্রের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা পেতে পারে।"

যদিও সরকারের তরফ থেকে আশ্বাস দেওয়া হলেও, সূর্য কুমারী দেবনাথের মতো বৃদ্ধাদের আতঙ্কের মেঘগুলো মুছে ফেলা সোজা নয়। তাদের জন্য শুধুমাত্র বৃদ্ধভাতা নয়, আরও একাধিক প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার মধ্যে এক প্রকার অন্ধকারের ভিতর জোর করে চলা। একাধিক বছরের আর্থিক অনিশ্চয়তার মধ্যে এভাবেই তাদের জীবন যাপন করতে হয়, যেখানে কোনো একটি ছোট ভুল অথবা প্রশাসনিক জটিলতা তাদের জীবনে বিশাল বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে।

এটি স্পষ্ট যে, যদি প্রশাসনিকভাবে একটি বড় দুর্বলতা থাকে, তবে এই ধরনের জনগণের জীবনও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে, যারা কোনোভাবে নিজেদের জীবিকা চালানোর জন্য সরকারী সহায়তার উপর নির্ভরশীল। অতএব, তাঁদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার জন্য সকল প্রশাসনিক স্তরে আরও সতর্কতা এবং সহানুভূতির প্রয়োজন।

news image
আরও খবর

এই ঘটনায় সূর্য কুমারী দেবনাথের মতো একাধিক বৃদ্ধাদের একান্ত প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া উচিত, যাতে তারা প্রশাসনিক ঝামেলার মধ্যে না পড়ে এবং তাদের সুরক্ষিত জীবনযাপন নিশ্চিত করা যায়। সরকার এবং প্রশাসনকে বৃদ্ধদের প্রতি তাদের বিশেষ সহানুভূতির প্রকাশ করতে হবে, যেন তাঁদের জীবনের প্রতি সমস্ত ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা করা যায় এবং সঠিক দিকনির্দেশনা নিশ্চিত করা যায়। 

সূর্য কুমারী দেবনাথের পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে তাকে কোনো সহায়তা দেননি। তাদের থেকে তিনি নিঃস্ব, এবং একমাত্র সহায়তা হিসেবে তাকে সরকারের দেওয়া বৃদ্ধভাতাই বেঁচে থাকার শেষ অবলম্বন। ১০০০ টাকার বৃদ্ধভাতা দিয়ে তিনি তার বাড়ি ভাড়া দেন এবং খাবার খেয়ে থাকেন। কিন্তু সরকারের নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, এসআইআর ফর্ম ফিলাপ না করার কারণে তার বৃদ্ধভাতা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই ভয়ে তিনি গভীর উদ্বেগ এবং আতঙ্কে আছেন।

তার পরিবারে ছেলেমেয়েরা কেউ তাকে দেখতে আসে না, এমনকি তারা তাকে উপযুক্ত সাহায্যও প্রদান করে না। সূর্য কুমারী দেবনাথ একা একটি ছোট ঘর ভাড়া করে থাকেন। তার কাছে একমাত্র সম্বল যে ১০০০ টাকার বৃদ্ধভাতা, তা ছাড়া তার আর কিছুই নেই। আজ পর্যন্ত, ১৫-২০ বছর ধরে তার ভরসা শুধু এই বৃদ্ধভাতাই। কিন্তু আজ তিনি আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন, কারণ যদি কোনো কারণে তার বৃদ্ধভাতা বন্ধ হয়ে যায়, তবে তার জন্য জীবনযাপন একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়বে।

এ অবস্থায়, তার মানসিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করেছে। তিনি রাত-দিন এই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন যে, হয়তো তাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে। এই চিন্তা তাকে আরও অসুস্থ করে তুলেছে। তার শারীরিক অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে এবং তিনি মনে করছেন যে, যদি তার বৃদ্ধভাতা বন্ধ হয়ে যায়, তবে তার জন্য বেঁচে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়বে।

এদিকে, কালনা পৌরসভার উপ পৌরপতি তপন পোড়েল জানিয়েছেন, এই ধরনের আতঙ্কে হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। তবে তিনি আশ্বস্ত করেছেন যে, এই ধরনের কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এসআইআর ফর্ম ফিলাপের জন্য মানুষের মাঝে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, তা অমূলক। তিনি আরও জানান যে, সকলের তথ্য সঠিকভাবে নথিভুক্ত করা হচ্ছে, এবং কেউ কোনোভাবে বৃদ্ধভাতা থেকে বঞ্চিত হবেন না। তবে, এই আশ্বাস সত্ত্বেও, সূর্য কুমারী দেবনাথের মতো বৃদ্ধাদের মন থেকে এই আতঙ্ক দূর করা এত সহজ নয়। তাদের জন্য একান্ত প্রয়োজনীয় সহায়তা এবং নিরাপত্তা দিতে সরকার এবং প্রশাসনকে আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে।

এই ধরনের ঘটনা মূলত আমাদের সমাজের অবহেলার প্রতিফলন, যেখানে বৃদ্ধরা তাদের শেষ বয়সে একাকী, নিঃস্ব এবং অসহায় হয়ে পড়ে। তাদের জীবনযাপন এক প্রকার অন্ধকারে নেমে আসে, এবং তাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল হিসেবে যে বৃদ্ধভাতাটি থাকে, তা নিয়েও তারা আতঙ্কিত হয়ে থাকে। বৃদ্ধাদের প্রতি এই ধরনের প্রশাসনিক নজরদারি, ভুল নথিপত্রের কারণে তাদের জীবনযাত্রা আরো কঠিন হয়ে পড়ে, যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

তবে, এটি স্পষ্ট যে, সরকারের উচিত বৃদ্ধাদের জন্য আরো সহানুভূতিশীল হতে এবং তাদের জীবনের শেষ অধ্যায়ে নিরাপত্তা এবং সহায়তা নিশ্চিত করা। বৃদ্ধদের বৃদ্ধভাতা বন্ধ হওয়া মানে তাদের বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় বন্ধ হয়ে যাওয়া, যা খুবই দুঃখজনক। সূর্য কুমারী দেবনাথের মতো হাজার হাজার মানুষ যদি এই ধরনের আতঙ্কে ভোগেন, তাহলে আমাদের সমাজের দায়বদ্ধতা আরও বেড়ে যায়।

তবে, তপন পোড়েল এই আতঙ্কে ভোগা মানুষের জন্য আশ্বাস দিয়েছেন, এবং সরকারের তরফে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেছেন। এ ধরনের আতঙ্ক ও উদ্বেগ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে যদি প্রশাসন একযোগে সঠিক নির্দেশনা এবং সহায়তা প্রদান করে। একজন বৃদ্ধের জীবন, বিশেষ করে যখন সে একাকী থাকে, তখন তার জন্য সঠিক সহায়তা নিশ্চিত করা সরকারের অন্যতম দায়িত্ব।

এছাড়াও, এই ঘটনায় সূর্য কুমারী দেবনাথের মতো হাজার হাজার বৃদ্ধের জন্য একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হওয়া প্রয়োজন, যাতে তারা তাদের জীবনের শেষ প্রান্তে এসে কোনো ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে না থাকেন। তাদের জন্য একটি সুরক্ষিত জীবন নিশ্চিত করতে হবে, যেখানে তারা নির্বিঘ্নে জীবনযাপন করতে পারবেন এবং সমাজের সহায়তা নিয়ে চলতে পারবেন।

এটাই সেই সময়, যখন আমাদের সরকার এবং প্রশাসনকে বৃদ্ধদের জন্য বিশেষ সহায়তা প্রদানের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত, যেন ভবিষ্যতে সূর্য কুমারী দেবনাথের মতো আর কোনো বৃদ্ধ এই ধরনের আতঙ্কে ভুগতে না হয়।

Preview image