আমরণ অনশন কর্মসূচি রাজ্যের আগামী ভোট-রাজনীতিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের অবস্থান নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তাই তৃণমূল ও বিজেপি উভয় পক্ষই এখন থেকে সতর্ক অবস্থানে।
পূর্বঘোষণামতো ঠাকুরনগরে এসআইআরের বিরুদ্ধে আমরণ অনশনে বসেছেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের মতুয়া সমর্থকরা। বুধবার বনগাঁর ঠাকুরনগরের বাড়িতে তাদের এই অনশন শুরু হয়। আন্দোলনের রণকৌশল ঠিক করতে রবিবার ঠাকুরনগরে বৈঠক করে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ। বৈঠকে মূলত দুইটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় — প্রথমত, এসআইআর প্রক্রিয়ায় মতুয়া ভোটারদের নাম বাদ পড়ার আশঙ্কা কীভাবে মোকাবিলা করা যায় এবং দ্বিতীয়ত, প্রয়োজনে আন্দোলন কত দূর পর্যন্ত নেওয়া হবে। মতুয়া মহাসঙ্ঘের একাংশের অভিযোগ, ভোটার তালিকা পর্যালোচনার নামে সম্প্রদায়ের মানুষের নাগরিকত্ব নিয়ে অযথা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। রবিবার মমতাবালার অনুগামীরা আমরণ অনশনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন।
বুধবার সকালে মমতাবালা নিজের ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “বাংলাদেশি ঘোষণা ও কাগজের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব নয়, ২০২৪ সাল পর্যন্ত ভারতবর্ষে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী মতুয়া-সহ দেশভাগের বলি ছিন্নমূল উদ্বাস্তুদের নতুন আইন প্রণয়ন করে নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দিতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “এসআইআরের নামে ভারতবর্ষে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী মতুয়া-সহ দেশভাগের বলি ছিন্নমূল উদ্বাস্তুদের ভোটাধিকার বাতিলের চক্রান্তের প্রতিবাদে ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়িতে আমরণ অনশন শুরু হলো।”
রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, এই আমরণ অনশন রাজ্যের আগামী ভোট-রাজনীতিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের অবস্থান নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। তাই তৃণমূল ও বিজেপি উভয় পক্ষই এখন সতর্ক। গত কয়েকটি নির্বাচনে মতুয়াদের বড় অংশের ভোট পেয়েছে বিজেপি। তৃণমূল তাদের হারানো ভোটব্যাঙ্ক ফিরে পেতে মরিয়া। তাই এসআইআর-এর বিষয়কে সামনে রেখে মতুয়া ভোটব্যাঙ্কে প্রভাব দেখাতে রাজ্যের শাসকদল মমতাবালাকে ময়দানে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।