মঙ্গলবার নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে মাওবাদী নেতা মাডবী হিডমা ও তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয় তার পর মারেদুমিলির জঙ্গলে বাকি মাওবাদীদের খোঁজে তল্লাশি চলছিল বুধবার নিরাপত্তাবাহিনী ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আরও সাত মাওবাদী নিহত হয়েছে
মাওবাদীদের শীর্ষনেতা মাডবী হিডমার মৃত্যু হয় নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে। তার স্ত্রীরও মৃত্যু হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এই ঘটনা ঘটে মঙ্গলবার এবং এরপর থেকে নিরাপত্তাবাহিনী মাওবাদী সংগঠনের বাকি সদস্যদের খোঁজে ব্যাপক তল্লাশি শুরু করে। বিশেষভাবে মারেদুমিলির জঙ্গলকে কেন্দ্র করে এই তল্লাশি কার্যক্রম চলছে যেখানে মাওবাদী গ্রুপের শীর্ষনেতা এবং অন্যান্য সদস্যরা লুকিয়ে ছিল। নিরাপত্তাবাহিনী এবং পুলিশ মাওবাদীদের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য তল্লাশি চালাচ্ছিল এবং সেই সময়ে বুধবার আরও এক গুরুত্বপূর্ণ সংঘর্ষ ঘটে
এই সংঘর্ষে আরও সাত মাওবাদী নিহত হয় এবং তাদের অস্তিত্বের সংখ্যা কমানো হলেও অনেক মাওবাদী সদস্য এখনো পালিয়ে রয়েছে এবং তাদের খোঁজে তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে। এই ঘটনাটি নিরাপত্তাবাহিনীর জন্য একটি বড় সাফল্য হলেও এটি মাওবাদী সংগঠনের শক্তির সঙ্কুচিত হওয়ার প্রমাণ দিচ্ছে, তবে তাদের শেষ সদস্যদের ধরা বা তাদের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করার জন্য আরও অভিযান চালানো হচ্ছে। তল্লাশি অভিযানগুলি মাওবাদীদের অবস্থান সনাক্ত করতে এবং তাদের শক্তি কমিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে
এখনো পর্যন্ত, নিরাপত্তাবাহিনী একটি সুস্পষ্ট লক্ষ্যে কাজ করছে যাতে তারা মাওবাদীদের সমস্ত অবশিষ্ট সদস্যদের ধরতে সক্ষম হয় এবং তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে পারে। এর মাধ্যমে মাওবাদী সংগঠনটি আরও দুর্বল হবে এবং নিরাপত্তাবাহিনী তাদের বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে জয়ী হতে সক্ষম হবে
বুধবার সকালে, আলুরি সীতারামারাজু জেলার মারেদুমিলির জঙ্গলে এক দুঃসাহসিক গুলির লড়াই শুরু হয়। নিরাপত্তাবাহিনী এবং মাওবাদীদের মধ্যে তীব্র গুলির লড়াই হয়, যার ফলে মাওবাদীদের মধ্যে আরও সাত সদস্য নিহত হয়। এই ঘটনায় তল্লাশি অভিযান এখনও চলছে এবং এর মধ্যে তিনজন মাওবাদী মহিলা সদস্যও মারা গেছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে মাওবাদীদের তিন মহিলা সদস্যও রয়েছেন
এডিজি মহেশচন্দ্র লাড্ডা জানিয়েছেন যে মঙ্গলবার ছয় মাওবাদীর মৃত্যুর পর থেকে জঙ্গলকে ঘিরে তল্লাশি শুরু হয়। তল্লাশি রাতভর চলতে থাকে এবং পরদিন ভোরে মাওবাদীরা নিরাপত্তাবাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পাল্টা গুলি চালায় বাহিনীও, যার ফলস্বরূপ সাত মাওবাদী নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে মাওবাদীদের শীর্ষনেতা মাডবী হিডমা এবং তার স্ত্রীর পাশাপাশি অন্যান্য মাওবাদী সদস্যদেরও মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার পর নিরাপত্তাবাহিনী তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে এবং মাওবাদীদের বাকি সদস্যদের খোঁজে অভিযান চালানো হচ্ছে
নিরাপত্তাবাহিনীর তল্লাশি আরও তীব্র করা হয়েছে যাতে মাওবাদী সংগঠনের আর কোনও সদস্য তাদের অবস্থান পরিবর্তন না করে পালিয়ে না যেতে পারে মাওবাদীদের গ্রেফতার ও তাদের অস্ত্র উদ্ধার করার জন্য নিরাপত্তাবাহিনী একাধিক দিক থেকে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এটি নিরাপত্তাবাহিনীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, কারণ মাওবাদী সংগঠনটির শীর্ষ নেতাদের মৃত্যু এবং বাকি সদস্যদের অবস্থান সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেলে তাদের শক্তি আরও কমে যাবে। তল্লাশি কার্যক্রম চলমান থাকায় মাওবাদীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তাবাহিনীর সংগ্রাম এখনও শেষ হয়নি এবং বাকিদের ধরা বা তাদের কার্যক্রম বন্ধ করার লক্ষ্যে নিরাপত্তাবাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে
এডিজি লাড্ডা আরও জানান, মাওবাদী নেতা হিডমার খোঁজ কীভাবে পেল নিরাপত্তাবাহিনী, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। সন্দেহের তির আত্মসমর্পণকারী আর এক শীর্ষনেতার দিকে, যিনি নিরাপত্তাবাহিনীকে মাওবাদীদের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য প্রদান করেছিলেন। এই তথ্যের ভিত্তিতেই বাহিনী মারেদুমিলির জঙ্গলে তল্লাশি শুরু করে এবং মাওবাদীদের অবস্থান সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা পায়। এই তদন্তের অংশ হিসেবে নিরাপত্তাবাহিনী সন্দেহ করছে যে, শীর্ষনেতাদের আত্মসমর্পণকারী সদস্যরা তাদের তথ্যের ভিত্তিতে বাহিনীকে সহায়তা করছে
এডিজি লাড্ডা আরও জানিয়েছেন, নিহতদের শনাক্তকরণের কাজ চলছে এবং এক জনকে শনাক্ত করা গিয়েছে। তাঁর নাম মেটুরি জোখা রাও, যিনি ‘টেক শঙ্কর’ নামেও পরিচিত। তিনি শ্রীকাকুলামের বাসিন্দা ছিলেন এবং অন্ধ্র-ওড়িশা সীমানায় এরিয়া কমিটি মেম্বার (এসিএম) ছিলেন। তিনি প্রযুক্তিতে অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন, বিশেষ করে অস্ত্র তৈরি এবং যোগাযোগ সংক্রান্ত সরঞ্জাম তৈরি করার ক্ষেত্রে। এই দক্ষতার কারণে তাকে মাওবাদী সংগঠনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রাখা হয়েছিল। শঙ্করের মৃত্যু নিরাপত্তাবাহিনীর জন্য একটি বড় সাফল্য, কারণ তিনি মাওবাদী সংগঠনের অন্যতম শক্তিশালী সদস্য ছিলেন এবং তার দক্ষতার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে যে অন্ধ্র এবং ওড়িশা সীমানায় মাওবাদীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তাবাহিনী ব্যাপক অভিযান চালাচ্ছে। এই অভিযানটির লক্ষ্য ছিল মাওবাদী সংগঠনের শক্তি কমানো এবং তাদের কর্মকাণ্ডকে প্রতিরোধ করা। এই অভিযানের অংশ হিসেবে নিরাপত্তাবাহিনী ৫০ জন মাওবাদীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য রয়েছে যারা মাওবাদী সংগঠনের শীর্ষ স্তরে ছিলেন এবং তাদের গ্রেফতার নিরাপত্তাবাহিনীর জন্য একটি বড় সাফল্য হিসেবে গণ্য হচ্ছে
এই অভিযানের সময় উদ্ধার করা হয়েছে ৪৫টি অস্ত্র, ২৭২ রাউন্ড কার্তুজ, দু’টি ম্যাগাজ়িন, ৭৫০ গ্রাম তার এবং বিস্ফোরকের সরঞ্জাম। এই উদ্ধারকৃত সরঞ্জামগুলোর মাধ্যমে মাওবাদী সংগঠনের শক্তি এবং তাদের আক্রমণের ক্ষমতা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেছে। বিশেষ করে অস্ত্র ও বিস্ফোরকের সরঞ্জাম উদ্ধার হওয়ায়, এটি আরও পরিষ্কার হয় যে মাওবাদীরা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল এবং তারা নিরাপত্তাবাহিনীর ওপর আক্রমণ চালানোর পরিকল্পনা করছিল
নিরাপত্তাবাহিনীর এই অভিযানটি মাওবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। নিরাপত্তাবাহিনী শুধুমাত্র মাওবাদীদের গ্রেফতার করছে না বরং তাদের অস্ত্র এবং বিপজ্জনক সরঞ্জামও উদ্ধার করছে, যা তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে সহায়তা করবে। এটি নির্দেশ করে যে নিরাপত্তাবাহিনী মাওবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে তার কার্যক্রম আরও তীব্র করেছে এবং এই ধরনের অভিযানগুলো মাওবাদী সংগঠনের শক্তি ও প্রভাব কমানোর দিকে একটি বড় পদক্ষেপ
এই অভিযানটি অন্ধ্র এবং ওড়িশা সীমানায় সুষ্ঠু আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এবং মাওবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে নিরাপত্তাবাহিনীর সংকল্পকে দৃঢ় করছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে যে তল্লাশি অভিযানগুলি আরও তীব্রভাবে চালানো হবে এবং মাওবাদীদের সমস্ত নেটওয়ার্ক এবং কার্যক্রম ধ্বংস করার লক্ষ্যে কাজ করা হবে
এটি স্পষ্ট যে, নিরাপত্তাবাহিনী মাওবাদী সংগঠনকে শিকড়মুক্ত করতে ধারাবাহিকভাবে কাজ করছে এবং তাঁদের শক্তিশালী সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে। তবে, মাওবাদী সংগঠনটি এখনো তাদের উপস্থিতি বজায় রেখেছে এবং নিরাপত্তাবাহিনীর তল্লাশির মুখে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে। নিরাপত্তাবাহিনী মাওবাদীদের বিরুদ্ধে আরও তীব্র অভিযান চালাতে প্রস্তুত, তবে এই ধরনের সংঘর্ষের মধ্যে হতাহতের ঘটনা অবধি মাওবাদী সংগঠনটি তাদের উপস্থিতি বজায় রাখতে সক্ষম হচ্ছে
এখনও অনেক মাওবাদী সদস্য সংগঠনের ভেতরে সক্রিয় রয়েছে এবং তারা বিভিন্ন উপায়ে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তারা নিরাপত্তাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করছে এবং তাদের সুরক্ষা বজায় রাখার জন্য গুলি চালাচ্ছে। মাওবাদী সংগঠনের এই ধরনের প্রতিরোধ ব্যবস্থা তাদের সক্ষমতা ও অব্যাহত অস্তিত্বের চিহ্ন হিসেবে দেখা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি নিরাপত্তাবাহিনীর জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে অবস্থিত, তবে নিরাপত্তাবাহিনীর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং তাদের লক্ষ্য হলো এই ধরনের প্রতিরোধ কমানো
নিরাপত্তাবাহিনী বিভিন্ন অভিযান ও তল্লাশি পরিচালনা করছে এবং তাদের উদ্দেশ্য হলো মাওবাদী সংগঠনের প্রভাব প্রতিরোধ করা এবং তাদের কার্যক্রম বন্ধ করা। তল্লাশি অভিযানের সাফল্য নিশ্চিত হলে এটি মাওবাদী সংগঠনটির শক্তি ও প্রভাব কমাতে সহায়ক হবে এবং এর ফলে তাদের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর ঘটনা এবং সংঘর্ষের সংখ্যা কমে যাবে। এই ধরনের অভিযানগুলি মাওবাদী সংগঠনকে শিকড়মুক্ত করতে সহায়তা করবে এবং এলাকার শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে
এছাড়া, নিরাপত্তাবাহিনী আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত রয়েছে যাতে মাওবাদী সংগঠনের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করা যায়। গুলি চালানোর ঘটনা ও সংঘর্ষের ঝুঁকি কমানোর জন্য নিরাপত্তাবাহিনী পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে এবং তাদের লক্ষ্য হচ্ছে মাওবাদীদের সর্বশেষ অস্তিত্বও নির্মূল করা