ভারত নবায়নযোগ্য শক্তির ক্ষেত্রে এক বড় মাইলফলক ছুঁয়েছে। কেন্দ্রীয় নবায়নযোগ্য শক্তি মন্ত্রণালয় (MNRE)–এর তথ্য অনুযায়ী, দেশজুড়ে মোট ৯১,৫৭৪টি সরকারি ভবনের ছাদে রুফটপ সোলার সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে, যার সম্মিলিত উৎপাদন ক্ষমতা ১,৮২৫.৬২ মেগাওয়াট। ৪ নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত এই রেকর্ড স্থাপিত হয়েছে, যা সরকারি ভবনগুলিকে নবায়নযোগ্য শক্তির আওতায় আনার ক্ষেত্রে ভারতের সবচেয়ে বড় অগ্রগতি বলে বিবেচিত হচ্ছে।
ভারত আজ বিশ্বের বৃহত্তম সবুজ শক্তি পরিবর্তনকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। সৌর শক্তি, বায়ু শক্তি, হাইড্রোজেন প্রযুক্তি—সবক্ষেত্রেই দেশ শক্তিশালী অগ্রগতি করছে। তারই অংশ হিসেবে ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারী ভবনগুলোকে নবায়নযোগ্য শক্তির আওতায় আনার একটি বৃহদাকারের উদ্যোগ চলছে। Business News This Week–এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ৪ নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত ভারতে মোট ৯১,৫৭৪টি সরকারি ভবনে সফলভাবে রুফটপ সৌর (Rooftop Solar) সিস্টেম ইনস্টল করা হয়েছে, যার মোট উৎপাদন ক্ষমতা ১,৮২৫.৬২ মেগাওয়াট। এটি নিঃসন্দেহে ভারতের নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে বিশাল সাফল্যের প্রতীক।
ভারতের নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে বড় সাফল্য হিসেবে দেশজুড়ে মোট ৯১,৫৭৪টি সরকারি ভবনের ছাদে রুফটপ সোলার ইনস্টল করা হয়েছে, যার সম্মিলিত উৎপাদন ক্ষমতা ১,৮২৫.৬২ মেগাওয়াট। কেন্দ্রীয় নবায়নযোগ্য শক্তি মন্ত্রণালয়ের এই তথ্য অনুযায়ী, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, থানা, পঞ্চায়েত ভবন এবং রাজ্য সচিবালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে সোলার প্যানেল স্থাপন হওয়ায় বিদ্যুৎ খরচ কমছে এবং পরিষ্কার শক্তির ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। PM Surya Ghar Muft Bijli Yojana–র অধীনে ২০২৪ সাল থেকে এই প্রকল্প কার্যকর হয়েছে, যা সরকারি ভবন রূপান্তরকে আরও ত্বরান্বিত করেছে। রুফটপ সোলারের মাধ্যমে বছরে লক্ষাধিক টন কার্বন নিঃসরণ কমানো সম্ভব হবে, যা ভারতের Net Zero 2070 লক্ষ্য পূরণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। যদিও কিছু ভবনে রক্ষণাবেক্ষণ, প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা ও অনুমোদন–সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবুও প্রকল্পটি দ্রুত এগোচ্ছে এবং ভবিষ্যতে সরকারি ভবনে সৌর সক্ষমতা আরও বিস্তৃত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রুফটপ সোলার স্থাপনের ফলে সরকারি দপ্তরগুলোর বিদ্যুৎ ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমছে। স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, থানা, পঞ্চায়েত ভবন, জেলা প্রশাসন ভবন, রাজ্য সচিবালয়—সব জায়গাতেই পরিষ্কার শক্তির ব্যবহার বাড়ছে। সোলার প্যানেলের মাধ্যমে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে, যা সরাসরি সরকারি দপ্তরের কাজকর্মে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ স্থানীয় গ্রিডেও পাঠানো হচ্ছে।
এই উদ্যোগের মূল চালিকা শক্তি হলো কেন্দ্রীয় সরকারের PM Surya Ghar Muft Bijli Yojana, যার অধীনে ২০২৪ সাল থেকে সরকারি ভবনের ছাদগুলিকে চিহ্নিত করে পর্যায়ক্রমে সোলার প্যানেল স্থাপনের কাজ শুরু হয়। পাশাপাশি EPC মডেল, সরকারি অনুদান এবং কেন্দ্র–রাজ্য সমন্বিত নীতির কারণেই এই বিশাল মাত্রার ইনস্টলেশন সম্ভব হয়েছে।
পরিবেশগত দিক থেকে এই সফলতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১,৮২৫ মেগাওয়াট সোলার শক্তি বছরে কয়েক লক্ষ টন কার্বন নিঃসরণ কমাতে সক্ষম। ভারতের Net Zero 2070 লক্ষ্য পূরণে এই রুফটপ সোলার প্রকল্প বড় ভূমিকা রাখবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
তবে চ্যালেঞ্জও রয়েছে। অনেক পুরনো ভবনে ছাদ দুর্বল হওয়ায় প্যানেল বসানো যাচ্ছে না, কিছু শহরে রক্ষণাবেক্ষণ কর্মীর ঘাটতি রয়েছে, আবার কোথাও প্রশাসনিক অনুমোদন পেতে সময় লেগেছে। তবুও প্রকল্পটি দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন—আগামী ২–৩ বছরে সরকারি ভবনে রুফটপ সোলার সক্ষমতা ৩,০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যাবে এবং সরকারি ভবনগুলো ভারতের নবায়নযোগ্য শক্তির কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করবে।
ভারত সরকার ২০১৪ সালের পর থেকেই নবায়নযোগ্য শক্তিকে ‘প্রথম সারির’ অগ্রাধিকারের জায়গায় নিয়ে আসে। ভারতের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের একটি বড় অংশ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওপর নির্ভরশীল ছিল, যা পরিবেশে দূষণ বাড়ায়। এই অবস্থায় দেশ সিদ্ধান্ত নেয়—
দেশের মোট শক্তি উৎপাদনে নবায়নযোগ্য শক্তির অংশ ২০২০-এর পরে দ্রুত বৃদ্ধি করতে হবে।
রুফটপ সোলার সেই পরিকল্পনার মূল স্তম্ভ।
সরকারি ভবনগুলোকে সৌর শক্তিতে রূপান্তর করাটা ছিল এক বিশেষ কৌশল।
কারণ সরকারের ভবনগুলোই—
বার্ষিক বিদ্যুৎ ব্যয় সবচেয়ে বেশি হয়
দৈনিক বহু লোড বহন করে
এবং সরকারি দপ্তারের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ও অনেক
তাই সরকারি ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল বসানো মানে বিদ্যুতের খরচ কমানো, পরিষ্কার শক্তি ব্যবহার করা এবং পরিবেশ দূষণ কমানো।
সাধারণ ভবন নয়—স্কুল, কলেজ, রাজ্য সচিবালয়, ব্লক অফিস, জেলা আদালত, পঞ্চায়েত ভবন, পুলিশ স্টেশন, সরকারি হাসপাতাল, পৌরসভা ভবন, ব্যাংক শাখা—সব ধরনের সরকারি কাঠামোকে এই উদ্যোগের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
Ministry of New & Renewable Energy (MNRE)–এর তথ্য বলছে—এই কাজগুলো সম্পন্ন হয়েছে কেন্দ্র–রাজ্য যৌথ উদ্যোগ, বিশেষ বরাদ্দ, সৌর নীতির পরিবর্তন এবং সিলেক্টেড EPC কন্ট্রাক্টরদের মাধ্যমে।
এই কর্মসূচির আরেক বিশেষ অংশ হলো—PM Surya Ghar Muft Bijli Yojana–র অন্তর্গত সরকারি ভবন সংস্কার। এই প্রকল্প ২০২৪ সালে শুরু হয় এবং এর আওতায় সরকারি অফিসগুলোর ছাদ ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হয়।
১,৮২৫ মেগাওয়াট সৌর শক্তি মানে—
প্রতি ঘণ্টায় আনুমানিক লক্ষ লক্ষ ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন।
এই শক্তি ব্যবহার হচ্ছে:
সরকারি অফিসের লাইটিং
কম্পিউটার, সার্ভার, যন্ত্রপাতি
বিভিন্ন পরিষেবা ভবনের দৈনন্দিন কার্যক্রম
হাসপাতালের জরুরি পরিষেবা
ক্যাম্পাসে স্ট্রিট লাইটিং
জল সরবরাহ ভবনের পাম্প
এই উদ্যোগ শুধু শক্তি উৎপাদন নয়—বিদ্যুতের বিল কমিয়ে আনার দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন—ভারতের সরকারি ভবনগুলোর ছাদ হাজার হাজার একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত, যেগুলোর ৯০ শতাংশই অব্যবহৃত।
এই ছাদগুলোতে রুফটপ সোলার লাগানো ভবিষ্যতের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় পরিচ্ছন্ন শক্তির উৎস।
এতে—
জমির প্রয়োজন নেই
অতিরিক্ত বিনিয়োগ কম
রক্ষণাবেক্ষণ সহজ
দীর্ঘমেয়াদে উৎপাদনে স্থায়িত্ব
কেন্দ্রীয় সরকার তাই ছাদকে নবায়নযোগ্য শক্তির ভবিষ্যৎ প্ল্যাটফর্ম বানাতে চায়।
সরকারি দপ্তরগুলোর বিদ্যুৎ ব্যয় প্রতিবছর কয়েক হাজার কোটি টাকা। রুফটপ সোলার ইনস্টল হওয়ায় এই ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমছে।
যেকোনো সরকারি হাসপাতাল, ভবন, ব্লক অফিস বা স্কুলে যদি ১০–২০ কিলোওয়াটের সোলার ইনস্টলেশন করা হয়—তাহলে:
দৈনিক বিদ্যুৎ খরচ কমে
বিল সাশ্রয় হয়
এবং উৎপাদিত অতিরিক্ত শক্তি স্থানীয় গ্রিডে পাঠানো যায়
এর ফলে সরকারী ব্যয় অনেকটাই কমানো সম্ভব। এই অর্থ পরবর্তী উন্নয়নে ব্যবহার করা যায়।
১ মেগাওয়াট সৌর শক্তি বছরে প্রায় ১,৩০০ টন কার্বন নিঃসরণ কমাতে পারে।
তাহলে ১,৮২৫ মেগাওয়াট মানে—
লক্ষ লক্ষ টন কার্বন নিঃসরণ হ্রাস!
এটি ভারতকে ২০৭০ সালের মধ্যে Net Zero Emissions লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করবে।
এই বিশাল সাফল্যের মাঝেও চ্যালেঞ্জ রয়েছে—
কিছু রাজ্যে মৌসুমি সমস্যা
ছাদের কাঠামোগত সীমাবদ্ধতা
পুরনো ভবনে প্যানেল বসানোর অসুবিধা
রক্ষণাবেক্ষণ কর্মীর অভাব
স্থানীয় প্রশাসনিক জটিলতা
MNRE জানিয়েছে—কিছু ভবনে উচ্চতার কারণে প্যানেল বসানো সম্ভব হয়নি।
২০২৪ সালের সংসদীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, সরকারি ভবনগুলোতে প্রায় ৩.১ গিগাওয়াট সৌর শক্তি বসানোর সুযোগ রয়েছে।
এর মানে—বর্তমান ইনস্টলেশন ক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি।
সরকারি লক্ষ্য—
২০২৭ সালের মধ্যে কমপক্ষে ৩ লক্ষ সরকারি ভবনে সোলার ছাদ স্থাপন।
ভারতের নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে বড় সাফল্য হিসেবে দেশজুড়ে মোট ৯১,৫৭৪টি সরকারি ভবনের ছাদে রুফটপ সোলার ইনস্টল করা হয়েছে, যার সম্মিলিত উৎপাদন ক্ষমতা ১,৮২৫.৬২ মেগাওয়াট। কেন্দ্রীয় নবায়নযোগ্য শক্তি মন্ত্রণালয়ের এই তথ্য অনুযায়ী, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, থানা, পঞ্চায়েত ভবন এবং রাজ্য সচিবালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে সোলার প্যানেল স্থাপন হওয়ায় বিদ্যুৎ খরচ কমছে এবং পরিষ্কার শক্তির ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। PM Surya Ghar Muft Bijli Yojana–র অধীনে ২০২৪ সাল থেকে এই প্রকল্প কার্যকর হয়েছে, যা সরকারি ভবন রূপান্তরকে আরও ত্বরান্বিত করেছে। রুফটপ সোলারের মাধ্যমে বছরে লক্ষাধিক টন কার্বন নিঃসরণ কমানো সম্ভব হবে, যা ভারতের Net Zero 2070 লক্ষ্য পূরণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। যদিও কিছু ভবনে রক্ষণাবেক্ষণ, প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা ও অনুমোদন–সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবুও প্রকল্পটি দ্রুত এগোচ্ছে এবং ভবিষ্যতে সরকারি ভবনে সৌর সক্ষমতা আরও বিস্তৃত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আজকের দিনে ৯১,৫৭৪ সরকারি ভবনের ছাদে রুফটপ সোলার বসানো শুধু সংখ্যা নয়—এটি ভারতের শক্তিনীতির নতুন যুগের সূচনা।
পরিবেশবান্ধব, খরচ সাশ্রয়ী, প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত—সৌর শক্তি ভারতের ভবিষ্যৎ।
সরকারের এই পদক্ষেপ দেখাচ্ছে—
ভারত কেবল সবুজ শক্তির সমর্থক নয়—এখন নিজেই বিশ্বের পথপ্রদর্শক