Lenspedia Bangla Logo
  • কলকাতা
  • 30℃ Purba Bardhaman

মহিলাদের জন্য বিশেষ প্রবেশ নিয়ম: সৈনিক থেকে অফিসার সেনাবাহিনীতে সুযোগের নতুন দিগন্ত

আধুনিক ভারতীয় সেনাবাহিনী এখন আর শুধু পুরুষদের শক্তি ও সাহসের প্রতীক নয়; ধীরে ধীরে সেখানে মহিলাদের অংশগ্রহণও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনছে। দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় নারীদের ভূমিকা বাড়ানোর লক্ষ্যে একাধিক বিশেষ প্রবেশ নিয়ম চালু হয়েছে, যার মাধ্যমে মেয়েরা আজ সৈনিক থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ অফিসার পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এই নীতিগত পরিবর্তন শুধু মহিলাদের ক্ষমতায়নের পথ খুলে দেয়নি, বরং দেশের সামরিক শক্তিকেও আরও বহুমাত্রিক ও সমৃদ্ধ করেছে। সেনাবাহিনীতে মহিলাদের বিশেষ প্রবেশ ব্যবস্থার অন্যতম বড় সুবিধা হলো তাদের জন্য আলাদা করে নির্দিষ্ট কিছু এন্ট্রি স্কিম চালু করা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মহিলারা এখন ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি (NDA) পরীক্ষার মাধ্যমে সরাসরি অফিসার হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন, যা একসময় কেবল পুরুষদের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ ছিল। এর পাশাপাশি শর্ট সার্ভিস কমিশন (SSC)–এর মাধ্যমে বিভিন্ন শাখায় মহিলারা স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি উভয় ধরনের সামরিক ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। সেনাবাহিনীর মিলিটারি পুলিশ ইউনিটেও মহিলাদের জন্য আলাদা পদ সৃষ্টি হয়েছে, যা মাঠ পর্যায়ে সরাসরি কার্যকর ভূমিকা রাখে। সৈনিক পদেও মহিলাদের প্রবেশ এখন বাস্তব। শারীরিক ফিটনেস, মানসিক দৃঢ়তা এবং সামরিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা প্রমাণ করছেন যে দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় নারী-পুরুষের সমান স্থান রয়েছে। সেনাবাহিনীর বিভিন্ন প্রযুক্তিগত শাখা যেমন ইঞ্জিনিয়ারিং, সিগন্যালস, মেডিক্যাল সার্ভিস, জাজ অ্যাডভোকেট ডিপার্টমেন্ট এবং প্রশাসনেও আজ মহিলারা দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। এই সমস্ত পরিবর্তন শুধু সামরিক দপ্তরের নীতির বদল নয়, বরং সমাজের মানসিকতারও একটি গুরুত্বপূর্ণ রূপান্তর। আগে যেখানে মনে করা হত সেনাবাহিনী কঠোর, বিপদসংকুল এবং শুধুই পুরুষদের জন্য উপযুক্ত, আজ সেখানে মহিলারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন। তারা যুদ্ধক্ষেত্র, অফিসার প্রশিক্ষণ, নেতৃত্ব, কৌশলগত পরিকল্পনা সবক্ষেত্রেই নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করছেন। মহিলাদের জন্য বিশেষ প্রবেশ নিয়মের ফলে তাদের সামনে যে সুযোগগুলো খুলে গেছে, তা শুধু পেশাগত নয়, ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ। সেনাবাহিনীর নিয়মানুবর্তিতা, নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা, আত্মবিশ্বাস এবং দেশসেবার সুযোগ মহিলাদের ক্যারিয়ারকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিচ্ছে। পাশাপাশি সেনাবাহিনীর মধ্যেই মহিলাদের জন্য নিরাপদ আবাসন, সুবিধা এবং বিশেষ প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হচ্ছে, যা নতুন প্রজন্মকে আরও অনুপ্রাণিত করছে। এটি শুধু ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য একটি নতুন অধ্যায় নয়, বরং দেশের নারীর ক্ষমতায়নের ইতিহাসেও এক মাইলফলক। বিশেষ প্রবেশ নিয়মের মাধ্যমে মেয়েরা আজ বুঝে গেছেন যে ইউনিফর্ম শুধু সাহসের প্রতীক নয়, সুযোগেরও প্রতীক।


আধুনিক ভারতীয় সেনাবাহিনী এখন আর শুধু পুরুষদের শক্তি ও সাহসের প্রতীক নয়; ধীরে ধীরে সেখানে মহিলাদের অংশগ্রহণও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনছে। দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় নারীদের ভূমিকা বাড়ানোর লক্ষ্যে একাধিক বিশেষ প্রবেশ নিয়ম চালু হয়েছে, যার মাধ্যমে মেয়েরা আজ সৈনিক থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ অফিসার পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এই নীতিগত পরিবর্তন শুধু মহিলাদের ক্ষমতায়নের পথ খুলে দেয়নি, বরং দেশের সামরিক শক্তিকেও আরও বহুমাত্রিক ও সমৃদ্ধ করেছে।

সেনাবাহিনীতে মহিলাদের বিশেষ প্রবেশ ব্যবস্থার অন্যতম বড় সুবিধা হলো তাদের জন্য আলাদা করে নির্দিষ্ট কিছু এন্ট্রি স্কিম চালু করা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মহিলারা এখন ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি পরীক্ষার মাধ্যমে সরাসরি অফিসার হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন, যা একসময় কেবল পুরুষদের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ ছিল। এর পাশাপাশি শর্ট সার্ভিস কমিশন (SSC) এর মাধ্যমে বিভিন্ন শাখায় মহিলারা স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি উভয় ধরনের সামরিক ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। সেনাবাহিনীর মিলিটারি পুলিশ ইউনিটেও মহিলাদের জন্য আলাদা পদ সৃষ্টি হয়েছে, যা মাঠ পর্যায়ে সরাসরি কার্যকর ভূমিকা রাখে।

সৈনিক পদেও মহিলাদের প্রবেশ এখন বাস্তব। শারীরিক ফিটনেস, মানসিক দৃঢ়তা এবং সামরিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা প্রমাণ করছেন যে দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় নারী-পুরুষের সমান স্থান রয়েছে। সেনাবাহিনীর বিভিন্ন প্রযুক্তিগত শাখা যেমন ইঞ্জিনিয়ারিং, সিগন্যালস, মেডিক্যাল সার্ভিস, জাজ অ্যাডভোকেট ডিপার্টমেন্ট এবং প্রশাসনেও আজ মহিলারা দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন।

এই সমস্ত পরিবর্তন শুধু সামরিক দপ্তরের নীতির বদল নয়, বরং সমাজের মানসিকতারও একটি গুরুত্বপূর্ণ রূপান্তর। আগে যেখানে মনে করা হত সেনাবাহিনী কঠোর, বিপদসংকুল এবং শুধুই পুরুষদের জন্য উপযুক্ত, আজ সেখানে মহিলারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন। তারা যুদ্ধক্ষেত্র, অফিসার প্রশিক্ষণ, নেতৃত্ব, কৌশলগত পরিকল্পনা—সবক্ষেত্রেই নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করছেন।

মহিলাদের জন্য বিশেষ প্রবেশ নিয়মের ফলে তাদের সামনে যে সুযোগগুলো খুলে গেছে, তা শুধু পেশাগত নয়, ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ। সেনাবাহিনীর নিয়মানুবর্তিতা, নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা, আত্মবিশ্বাস এবং দেশসেবার সুযোগ মহিলাদের ক্যারিয়ারকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিচ্ছে। পাশাপাশি সেনাবাহিনীর মধ্যেই মহিলাদের জন্য নিরাপদ আবাসন, সুবিধা এবং বিশেষ প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হচ্ছে, যা নতুন প্রজন্মকে আরও অনুপ্রাণিত করছে।

এটি শুধু ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য একটি নতুন অধ্যায় নয়, বরং দেশের নারীর ক্ষমতায়নের ইতিহাসেও এক মাইলফলক। বিশেষ প্রবেশ নিয়মের মাধ্যমে মেয়েরা আজ বুঝে গেছেন যে ইউনিফর্ম শুধু সাহসের প্রতীক নয়, সুযোগেরও প্রতীক।                ভারতীয় সেনাবাহিনী বহু দশক ধরে শক্তি, শৃঙ্খলা এবং আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে পরিচিত। ইতিহাসে এমন অসংখ্য মুহূর্ত রয়েছে যখন দেশের সুরক্ষার জন্য এই বাহিনীর সদস্যরা নিজেদের জীবন বাজি রেখেছেন। কিন্তু এই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে দীর্ঘদিন ধরে পুরুষরাই ছিলেন, কারণ সামাজিক ধারণা ছিল যে যুদ্ধক্ষেত্র, অস্ত্র পরিচালনা, স্ট্র্যাটেজিক নেতৃত্ব—এসব কাজে পুরুষরা বেশি উপযুক্ত। নারীকে বরাবরই রক্ষার প্রয়োজনীয় অস্তিত্ব হিসেবে দেখা হত, রক্ষক হিসেবে নয়। কিন্তু সময় বদলেছে, চিন্তাধারা বদলেছে, সমাজের মানসিকতার পাশাপাশি রাষ্ট্রের কাঠামোতেও এসেছে পরিবর্তন। আর সেই পরিবর্তনের অন্যতম বড় প্রতীক হলো ভারতীয় সেনাবাহিনীতে মহিলাদের প্রবেশের বিশেষ নিয়ম ও সুযোগ, যা আজ শুধু একটি নীতিগত প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং একটি সামাজিক বিপ্লব।

একসময় ভারতীয় মহিলাদের সেনাবাহিনীতে ভূমিকা প্রায় সীমাবদ্ধ ছিল চিকিৎসা সেবা ও নার্সিং ইউনিটে। তারা সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে যেতেন না, অস্ত্র পরিচালনা করতেন না, সামরিক কৌশল তৈরির টেবিলে বসতেন না। সমাজ মনে করত যুদ্ধক্ষেত্র নারীদের জন্য অত্যন্ত কঠোর এবং বিপদসংকুল। কিন্তু আজ ভারতের মহিলারা সেই পুরোনো ধারণাকে ভেঙে প্রমাণ করেছেন যে তারা শুধু যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়াতে পারে না, বরং অসাধারণ দক্ষতায় নেতৃত্বও দিতে পারে। এই দৃশ্যমান পরিবর্তনের পিছনে রয়েছে সেনাবাহিনীর বিশেষ প্রবেশের নিয়ম, যা ধীরে ধীরে মহিলাদের জন্য দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দরজা খুলে দিয়েছে।

মহিলাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রবেশ পথ সৃষ্টি হওয়ায় এখন তারা সৈনিক থেকে অফিসার পর্যন্ত যেকোনো পদে পৌঁছাতে পারে। আগে মহিলাদের জন্য কোনো কমব্যাট রোল ছিল না। তাঁদের জন্য ছিল সাপোর্টিভ বা প্রশাসনিক ভূমিকা। কিন্তু সমাজের চিন্তাধারা যেমন বদলেছে, তেমনই বদলেছে সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ মূল্যবোধ। এখন স্বীকার করা হচ্ছে যে শক্তি শুধু পেশিতে নয়, বরং মানসিক দৃঢ়তা, নেতৃত্বগুণ, শৃঙ্খলা এবং দেশপ্রেমেও।

প্রতিটি মেয়ে যখন ছোটবেলা থেকে ইউনিফর্ম পরা অফিসার বা জওয়ানদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়, তখন সে মনে মনে স্বপ্ন বুনে একদিন সেও দেশের জন্য কাজ করবে। কিন্তু আগে এই স্বপ্ন পূরণের সুযোগ সবার ছিল না। আজ সেই সীমাবদ্ধতা দূর হয়েছে। মেয়েরা এখন এনডিএ-তে যোগ দিতে পারে, যেখানে আগে তাদের প্রবেশ একেবারেই নিষিদ্ধ ছিল। এনডিএ-তে প্রবেশ করা মানে শুধু অফিসার হওয়ার সুযোগ নয়, বরং উত্তর ভারতের কঠোর প্রশিক্ষণ, শৃঙ্খলা, নেতৃত্বের শিক্ষার মধ্য দিয়ে একটি সম্পূর্ণ নতুন জীবনে প্রবেশ করা। প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত কঠোর শারীরিক অনুশীলন, অ্যাকাডেমিক ক্লাস, অস্ত্রচালনা প্রশিক্ষণ, কৌশলগত শিক্ষার মাধ্যমে গড়ে ওঠে একজন ভবিষ্যৎ সামরিক অফিসারের চরিত্র। মহিলাদের এই কঠোর প্রশিক্ষণে দাঁড়িয়ে প্রমাণ করতে হয় যে তারা শারীরিকভাবে ও মানসিকভাবে পুরুষদের তুলনায় কম নয়।

ইতিহাসের পৃষ্ঠা উল্টালে দেখা যায়, অনেক দেশেই মহিলারা যুদ্ধক্ষেত্রে অসাধারণ সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের নারী স্নাইপার, যুক্তরাষ্ট্রের নারী পাইলট, ইসরায়েলের নারী কমান্ডো—এসব উদাহরণ বিশ্বজুড়ে প্রমাণ করেছে যে দেশরক্ষার ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকা সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ভারতও সেই পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আজ ভারতীয় বায়ুসেনায় মহিলারা যুদ্ধবিমান চালাচ্ছেন, নৌবাহিনীতে গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন পরিচালনা করছেন, আর স্থলবাহিনীতেও নারী অফিসারের সংখ্যা বাড়ছে। এই পরিবর্তনের শিকড় গভীরভাবে নিহিত আছে বিশেষ প্রবেশ নীতির মধ্যেই।

শর্ট সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে মহিলারা আগে সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন শাখায় যোগ দিতেন, কিন্তু স্থায়ী কমিশন পাওয়ার সুযোগ ছিল না। এর অর্থ তারা অফিসার হিসেবে কাজ করলেও দীর্ঘমেয়াদে পদোন্নতি বা নেতৃত্বের স্থানে পৌঁছানোর সুযোগ পেতেন না। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের গুরুত্বপূর্ণ রায় ও সরকারের নীতিগত পরিবর্তনের ফলে মহিলাদের জন্য স্থায়ী কমিশন পাওয়ার পথ খুলে যায়। এটি কেবল একটি চাকরির স্থায়িত্ব নয়, বরং সেনাবাহিনীতে নেতৃত্বের সিঁড়িতে ওঠার সুযোগ। একজন মহিলা অফিসার এখন কর্নেল, ব্রিগেডিয়ার কিংবা মেজর জেনারেল হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারেন। তার নেতৃত্বে এখন একাধিক ইউনিট কাজ করতে পারে। তার সিদ্ধান্ত দেশের কৌশলগত নিরাপত্তার অংশ হতে পারে।

মহিলা সামরিক পুলিশের বিশেষ ইউনিট গঠনও ভারতের সামরিক ইতিহাসে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আগে সামরিক পুলিশের কাজও ছিল শুধুমাত্র পুরুষদের জন্য। কিন্তু এখন মহিলারা সরাসরি মাঠে কাজ করতে পারেন, যা প্রমাণ করে যে তাদের শক্তি কোনো ক্ষেত্রেই কম নয়। এই ইউনিট গঠনের ফলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা এবং লজিস্টিক ব্যবস্থায় আরও উন্নতি হয়েছে।

এ ছাড়াও সেনাবাহিনীর বিভিন্ন টেকনিক্যাল এবং নন-টেকনিক্যাল শাখায় মহিলাদের প্রবেশ বেড়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পস, সিগন্যাল কর্পস, মেডিক্যাল কর্পস, জাজ অ্যাডভোকেট জেনারেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় মহিলারা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। তারা সামরিক আদালতে বিচার করছেন, সেনাদের জন্য চিকিৎসা দিচ্ছেন, যোগাযোগব্যবস্থা রক্ষা করছেন, গুরুত্বপূর্ণ স্ট্র্যাটেজি তৈরি করছেন। আধুনিক যুদ্ধ শুধু বন্দুক বা ট্যাংকে সীমাবদ্ধ নয়; এখন যুদ্ধ হয় প্রযুক্তিতে, তথ্য বিশ্লেষণে, সাইবার নিরাপত্তায়। আর এই প্রতিটি ক্ষেত্রেই মহিলারা তাদের দক্ষতা দিয়ে প্রমাণ করছেন যে তারা দেশের জন্য একটি অপরিহার্য সম্পদ।

সেনাবাহিনীতে মহিলাদের সুযোগ বাড়ার ফলে সমাজে একটি বড় মানসিক পরিবর্তন এসেছে। আগে পরিবারের অনেকেই চাইতেন না মেয়েরা সেনাবাহিনীতে যাক, কারণ মনে করা হত এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। কিন্তু আজ মেয়েরা প্রমাণ করেছে সাহসের সংজ্ঞা লিঙ্গের ওপর নির্ভর করে না। দেশের জন্য দাঁড়ানো, দেশের জন্য কাজ করা এটা একজন মানুষের মৌলিক দেশপ্রেমের বিষয়, নারী-পুরুষের পার্থক্য নয়।

এখন ভারতের গ্রাম-শহরের অসংখ্য মেয়ে সেনাবাহিনীতে প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা কঠোর দৌড়াচ্ছে, মেডিক্যাল প্রস্তুতি নিচ্ছে, লিখিত পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা করছে, কারণ তারা বিশ্বাস করে দেশরক্ষার দায়িত্ব তারা নিতে পারে। অনেক বাবা-মা এখন গর্বের সঙ্গে 

ভারতীয় সেনাবাহিনী বহু দশক ধরে শক্তি, শৃঙ্খলা এবং আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে পরিচিত। ইতিহাসে এমন অসংখ্য মুহূর্ত রয়েছে যখন দেশের সুরক্ষার জন্য এই বাহিনীর সদস্যরা নিজেদের জীবন বাজি রেখেছেন। কিন্তু এই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে দীর্ঘদিন ধরে পুরুষরাই ছিলেন, কারণ সামাজিক ধারণা ছিল যে যুদ্ধক্ষেত্র, অস্ত্র পরিচালনা, স্ট্র্যাটেজিক নেতৃত্ব—এসব কাজে পুরুষরা বেশি উপযুক্ত। নারীকে বরাবরই রক্ষার প্রয়োজনীয় অস্তিত্ব হিসেবে দেখা হত, রক্ষক হিসেবে নয়। কিন্তু সময় বদলেছে, চিন্তাধারা বদলেছে, সমাজের মানসিকতার পাশাপাশি রাষ্ট্রের কাঠামোতেও এসেছে পরিবর্তন। আর সেই পরিবর্তনের অন্যতম বড় প্রতীক হলো ভারতীয় সেনাবাহিনীতে মহিলাদের প্রবেশের বিশেষ নিয়ম ও সুযোগ, যা আজ শুধু একটি নীতিগত প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং একটি সামাজিক বিপ্লব।

একসময় ভারতীয় মহিলাদের সেনাবাহিনীতে ভূমিকা প্রায় সীমাবদ্ধ ছিল চিকিৎসা সেবা ও নার্সিং ইউনিটে। তারা সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে যেতেন না, অস্ত্র পরিচালনা করতেন না, সামরিক কৌশল তৈরির টেবিলে বসতেন না। সমাজ মনে করত যুদ্ধক্ষেত্র নারীদের জন্য অত্যন্ত কঠোর এবং বিপদসংকুল। কিন্তু আজ ভারতের মহিলারা সেই পুরোনো ধারণাকে ভেঙে প্রমাণ করেছেন যে তারা শুধু যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়াতে পারে না, বরং অসাধারণ দক্ষতায় নেতৃত্বও দিতে পারে। এই দৃশ্যমান পরিবর্তনের পিছনে রয়েছে সেনাবাহিনীর বিশেষ প্রবেশের নিয়ম, যা ধীরে ধীরে মহিলাদের জন্য দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দরজা খুলে দিয়েছে।

মহিলাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রবেশ পথ সৃষ্টি হওয়ায় এখন তারা সৈনিক থেকে অফিসার পর্যন্ত যেকোনো পদে পৌঁছাতে পারে। আগে মহিলাদের জন্য কোনো কমব্যাট রোল ছিল না। তাঁদের জন্য ছিল সাপোর্টিভ বা প্রশাসনিক ভূমিকা। কিন্তু সমাজের চিন্তাধারা যেমন বদলেছে, তেমনই বদলেছে সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ মূল্যবোধ। এখন স্বীকার করা হচ্ছে যে শক্তি শুধু পেশিতে নয়, বরং মানসিক দৃঢ়তা, নেতৃত্বগুণ, শৃঙ্খলা এবং দেশপ্রেমেও।

প্রতিটি মেয়ে যখন ছোটবেলা থেকে ইউনিফর্ম পরা অফিসার বা জওয়ানদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়, তখন সে মনে মনে স্বপ্ন বুনে—একদিন সেও দেশের জন্য কাজ করবে। কিন্তু আগে এই স্বপ্ন পূরণের সুযোগ সবার ছিল না। আজ সেই সীমাবদ্ধতা দূর হয়েছে। মেয়েরা এখন এনডিএ-তে যোগ দিতে পারে, যেখানে আগে তাদের প্রবেশ একেবারেই নিষিদ্ধ ছিল। এনডিএ-তে প্রবেশ করা মানে শুধু অফিসার হওয়ার সুযোগ নয়, বরং উত্তর ভারতের কঠোর প্রশিক্ষণ, শৃঙ্খলা, নেতৃত্বের শিক্ষার মধ্য দিয়ে একটি সম্পূর্ণ নতুন জীবনে প্রবেশ করা। প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত কঠোর শারীরিক অনুশীলন, অ্যাকাডেমিক ক্লাস, অস্ত্রচালনা প্রশিক্ষণ, কৌশলগত শিক্ষার মাধ্যমে গড়ে ওঠে একজন ভবিষ্যৎ সামরিক অফিসারের চরিত্র। মহিলাদের এই কঠোর প্রশিক্ষণে দাঁড়িয়ে প্রমাণ করতে হয় যে তারা শারীরিকভাবে ও মানসিকভাবে পুরুষদের তুলনায় কম নয়।

ইতিহাসের পৃষ্ঠা উল্টালে দেখা যায়, অনেক দেশেই মহিলারা যুদ্ধক্ষেত্রে অসাধারণ সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের নারী স্নাইপার, যুক্তরাষ্ট্রের নারী পাইলট, ইসরায়েলের নারী কমান্ডো—এসব উদাহরণ বিশ্বজুড়ে প্রমাণ করেছে যে দেশরক্ষার ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকা সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ভারতও সেই পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আজ ভারতীয় বায়ুসেনায় মহিলারা যুদ্ধবিমান চালাচ্ছেন, নৌবাহিনীতে গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন পরিচালনা করছেন, আর স্থলবাহিনীতেও নারী অফিসারের সংখ্যা বাড়ছে। এই পরিবর্তনের শিকড় গভীরভাবে নিহিত আছে বিশেষ প্রবেশ নীতির মধ্যেই।

news image
আরও খবর

শর্ট সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে মহিলারা আগে সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন শাখায় যোগ দিতেন, কিন্তু স্থায়ী কমিশন পাওয়ার সুযোগ ছিল না। এর অর্থ তারা অফিসার হিসেবে কাজ করলেও দীর্ঘমেয়াদে পদোন্নতি বা নেতৃত্বের স্থানে পৌঁছানোর সুযোগ পেতেন না। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের গুরুত্বপূর্ণ রায় ও সরকারের নীতিগত পরিবর্তনের ফলে মহিলাদের জন্য স্থায়ী কমিশন পাওয়ার পথ খুলে যায়। এটি কেবল একটি চাকরির স্থায়িত্ব নয়, বরং সেনাবাহিনীতে নেতৃত্বের সিঁড়িতে ওঠার সুযোগ। একজন মহিলা অফিসার এখন কর্নেল, ব্রিগেডিয়ার কিংবা মেজর জেনারেল হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারেন। তার নেতৃত্বে এখন একাধিক ইউনিট কাজ করতে পারে। তার সিদ্ধান্ত দেশের কৌশলগত নিরাপত্তার অংশ হতে পারে।

মহিলা সামরিক পুলিশের বিশেষ ইউনিট গঠনও ভারতের সামরিক ইতিহাসে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আগে সামরিক পুলিশের কাজও ছিল শুধুমাত্র পুরুষদের জন্য। কিন্তু এখন মহিলারা সরাসরি মাঠে কাজ করতে পারেন, যা প্রমাণ করে যে তাদের শক্তি কোনো ক্ষেত্রেই কম নয়। এই ইউনিট গঠনের ফলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা এবং লজিস্টিক ব্যবস্থায় আরও উন্নতি হয়েছে।

এ ছাড়াও সেনাবাহিনীর বিভিন্ন টেকনিক্যাল এবং নন-টেকনিক্যাল শাখায় মহিলাদের প্রবেশ বেড়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পস, সিগন্যাল কর্পস, মেডিক্যাল কর্পস, জাজ অ্যাডভোকেট জেনারেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় মহিলারা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। তারা সামরিক আদালতে বিচার করছেন, সেনাদের জন্য চিকিৎসা দিচ্ছেন, যোগাযোগব্যবস্থা রক্ষা করছেন, গুরুত্বপূর্ণ স্ট্র্যাটেজি তৈরি করছেন। আধুনিক যুদ্ধ শুধু বন্দুক বা ট্যাংকে সীমাবদ্ধ নয়; এখন যুদ্ধ হয় প্রযুক্তিতে, তথ্য বিশ্লেষণে, সাইবার নিরাপত্তায়। আর এই প্রতিটি ক্ষেত্রেই মহিলারা তাদের দক্ষতা দিয়ে প্রমাণ করছেন যে তারা দেশের জন্য একটি অপরিহার্য সম্পদ।

সেনাবাহিনীতে মহিলাদের সুযোগ বাড়ার ফলে সমাজে একটি বড় মানসিক পরিবর্তন এসেছে। আগে পরিবারের অনেকেই চাইতেন না মেয়েরা সেনাবাহিনীতে যাক, কারণ মনে করা হত এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। কিন্তু আজ মেয়েরা প্রমাণ করেছে সাহসের সংজ্ঞা লিঙ্গের ওপর নির্ভর করে না। দেশের জন্য দাঁড়ানো, দেশের জন্য কাজ করা—এটা একজন মানুষের মৌলিক দেশপ্রেমের বিষয়, নারী-পুরুষের পার্থক্য নয়।

এখন ভারতের গ্রাম-শহরের অসংখ্য মেয়ে সেনাবাহিনীতে প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা কঠোর দৌড়াচ্ছে, মেডিক্যাল প্রস্তুতি নিচ্ছে, লিখিত পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা করছে, কারণ তারা বিশ্বাস করে—দেশরক্ষার দায়িত্ব তারা নিতে পারে। অনেক বাবা-মা এখন গর্বের সঙ্গে 

বলেন, তাদের মেয়েও একদিন সেনাবাহিনীতে অফিসার হবে। এই পরিবর্তন কেবল বাহিনীর নয়, সমাজের; কেবল নীতির নয়, মানসিকতা ও সংস্কৃতির।

সেনাবাহিনীতে মহিলাদের সামরিক প্রশিক্ষণ এবং কর্মপরিবেশও আজ অনেক উন্নত হয়েছে। তাদের জন্য আলাদা ব্যারাক, নিরাপদ আবাসন, স্বাস্থ্যসুবিধা, লিভ ব্যবস্থা, মাতৃত্বকালীন ছুটির মতো গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ রয়েছে। যুদ্ধক্ষেত্রে থাকলেও তারা সমান মর্যাদা এবং নিরাপত্তা পান। এটি শুধু মহিলাদের জন্য নয়, পুরুষদের জন্যও একটি ইতিবাচক পরিবর্তন, কারণ এটি একটি সমতা, সৌহার্দ্য এবং সহযোগিতামূলক পরিবেশ সৃষ্টি করে।

সেনাবাহিনীতে মহিলাদের জন্য বিশেষ প্রবেশের নিয়ম দেশকে বুঝিয়ে দিয়েছে যে সুযোগ পেলেই নারীর শক্তি কতটা উন্নত ও বহুমাত্রিক হতে পারে। সৈনিক হিসেবে মাঠে দাঁড়ানো থেকে শুরু করে অফিসার হিসেবে নেতৃত্ব দেওয়া—সব ক্ষেত্রেই মহিলারা দিন দিন আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছেন। প্রতিটি মহিলা অফিসার যখন ইউনিফর্ম পরে দাঁড়ান, তখন তিনি শুধু একজন ব্যক্তি নন; তিনি দেশের সাহস, সম্মান, শৃঙ্খলা এবং অদম্য ইচ্ছাশক্তির প্রতীক হয়ে ওঠেন।

সেনাবাহিনীতে মহিলাদের উপস্থিতি বার্তা দেয় যে ভারত শুধু অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত বা সামরিক শক্তিতেই নয়; সামাজিক সমতা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং মানবিক উন্নতির ক্ষেত্রেও দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী দিনে আরও অনেক ইউনিট মহিলাদের জন্য খুলে যাবে, আরও কমব্যাট রোল তাদের হাতে যাবে, আরও বড় পদমর্যাদায় মহিলাদের দেখা যাবে। এবং এই ধারাবাহিক পরিবর্তন একসময় দেশকে এমন এক অবস্থানে নিয়ে যাবে যেখানে নারী-পুরুষ সমতার ধারণা আর বিতর্কের বিষয় থাকবে না; তা হবে একটি স্বাভাবিক বাস্তবতা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Preview image