Lenspedia Bangla Logo
  • কলকাতা
  • 30℃ Purba Bardhaman

২৩টি ছবি ফ্লপ রাকুল প্রীত প্রকাশ করলেন জ্যাকি ভাগনানি পরিবারের ভয়াবহ আর্থিক ক্ষতির সত্যতা

বলিউড অভিনেত্রী রাকুল প্রীত সিং সম্প্রতি বেশ সাহসিকতার সঙ্গে প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন যে তাঁর স্বামী জ্যাকি ভাগনানি এবং ভাগনানি পরিবার গত কয়েক বছরে ভয়াবহ আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছেন। পরিবারটির প্রযোজনা সংস্থা Pooja Entertainment এর ২৩টিরও বেশি চলচ্চিত্র বক্স অফিসে ব্যর্থ হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ অত্যন্ত বড় আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে ৪০০ কোটির বাজেটের Bade Miyan Chote Miyan এর বাণিজ্যিক ব্যর্থতা কোম্পানিকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

রাকুল প্রীত সিং–এর স্বামী জ্যাকি ভাগনানির পারিবারিক প্রযোজনা সংস্থায় বিপুল আর্থিক ক্ষতি— ২৩টি ছবি ফ্লপ, উঠে এলো বলিউডের ব্যবসায়িক ঝুঁকির কঠিন বাস্তবতা


 ভূমিকা: বলিউড গ্ল্যামারের আড়ালে লুকিয়ে থাকা আর্থিক বিপর্যয়ের সত্য গল্প

বলিউডের আলোঝলমলে দুনিয়ার পেছনে লুকিয়ে আছে কঠোর ব্যবসায়িক ঝুঁকি, কোটি টাকার বাজি এবং মুহূর্তে ভেঙে পড়া সাম্রাজ্যের গল্প। সম্প্রতি অভিনেত্রী রাকুল প্রীত সিং প্রকাশ্যে বলেছেন, তাঁর স্বামী জ্যাকি ভাগনানি ও তাদের পরিবার— বিশেষ করে ভাগনানি পরিবারের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান Pooja Entertainment— গত কয়েক বছরে বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
কারণ?
২৩টি ছবির ফ্লপ এবং উচ্চ বাজেটের একাধিক প্রকল্পের বাণিজ্যিক ব্যর্থতা।

রাকুলের বক্তব্য শুধু একটি পরিবারের আর্থিক ক্ষতির গল্প নয়— এটি বলিউডের সিনেমা ব্যবসার অনিশ্চয়তা, ঝুঁকি এবং ব্যর্থতার নির্মম বাস্তবতাকে নতুন করে সামনে নিয়ে এসেছে। তাঁর মতে, এমন সংকট নতুন নয়; বলিউডের ইতিহাসে সুপারস্টার অমিতাভ বচ্চনও একই ধরনের আর্থিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছিলেন।

এই প্রতিবেদনে আমরা বিশদে তুলে ধরছি—
 ভাগনানি পরিবারের আর্থিক ক্ষতির প্রকৃতি
 কেন একের পর এক ছবি ফ্লপ হলো
 রাকুল কী বললেন
 কতটা গুরুতর ক্ষতি
 Pooja Entertainment-এর ভবিষ্যৎ
 বলিউডে বড় বাজেটের ব্যর্থতার পেছনের শিল্পগত কারণ
 এই ঘটনা বলিউড অর্থনীতিকে কী বার্তা দিচ্ছে
 

রাকুল বলেন, “হ্যাঁ, ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু যে গুজব ছড়ানো হচ্ছে— কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেছে— তা সত্য নয়।” তিনি জানান, Pooja Entertainment আর্থিক চাপে পড়লেও সংস্থাটি শুধু পুনর্গঠন করছে, বন্ধ হয়নি। তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট— তাঁরা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে গেলেও আশা ছাড়েননি এবং এখনও নতুন পরিকল্পনার দিকে এগোতে চান।

শিল্পবিশেষজ্ঞদের মতে, ভাগনানি পরিবারের ক্ষতির পেছনে রয়েছে বেশ কিছু পদ্ধতিগত ভুল—
 উচ্চ বাজেট, কিন্তু দুর্বল স্ক্রিপ্ট
 দর্শকের চাহিদা বিচার না করে একের পর এক ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্প
 OTT যুগে অতিরিক্ত VFX–নির্ভর সিনেমার ব্যর্থতা
 ভুল সময় নির্বাচন ও অতিরিক্ত মার্কেটিং ব্যয়

অনেকেই লক্ষ্য করেছেন, বলিউডে বড় বাজেটের ব্যর্থতা এখন নিয়মিত ঘটনা। শুধু ভাগনানি পরিবারই নয়— একসময় অমিতাভ বচ্চনও তাঁর প্রযোজনা সংস্থা ABCL–এর কারণে বড় আর্থিক সংকট মোকাবিলা করেছিলেন। রাকুল তাই বলেন, “এই ব্যবসায় ব্যর্থতা নতুন নয়। একজন সুপারস্টারও কঠিন সময় দেখেছেন। তাই ক্ষতি মানেই শেষ নয়।”

গুরুতর ক্ষতির কারণে Pooja Entertainment–এ কর্মী কমানো, খরচ নিয়ন্ত্রণ, স্টুডিও রিসোর্স কমানোসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে সংস্থা ভবিষ্যতে ছোট বাজেটের গল্প–ভিত্তিক সিনেমা এবং OTT–র জন্য কনটেন্ট তৈরিতে মনোযোগ দেবে।

সব মিলিয়ে, রাকুলের এই বক্তব্য বলিউডের গ্ল্যামারের আড়ালে থাকা ব্যবসায়িক ঝুঁকির কঠিন বাস্তবতাকে সামনে এনে দেয়। তাঁর আশাবাদ, পরিপক্বতা ও স্বচ্ছ বক্তব্য বলিউড মহলে নতুন আলোচনা শুরু করেছে— “গ্ল্যামারের ভিতরেও রয়েছে কোটি টাকার ঝুঁকি, আর ক্ষতি মানেই শেষ নয়।”


 ভাগনানি পরিবারের আর্থিক ক্ষতি: রাকুলের স্বীকারোক্তিতে চাঞ্চল্য

রাকুল প্রীত সিং সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে বলেন—

“হ্যাঁ, আমরা বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখে দাঁড়িয়েছি। দুই–তিনটি ছবি ব্যর্থ হয়নি, তার থেকেও বেশি সংখ্যায় প্রকল্প ফ্লপ করেছে। ক্ষতির পরিমাণ বড়। কোম্পানি বন্ধ হয়নি, কিন্তু মানুষ যেভাবে কথা বলছে তা বাস্তব নয়।”

এই মন্তব্য হওয়ার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া এবং বলিউড মহলে আলোচনার ঝড় উঠে।

 ক্ষতির মূল কারণ: ২৩টি ছবি ফ্লপ

Pooja Entertainment গত এক দশকে বহু ছবি তৈরি করেছে, যার মধ্যে কয়েকটি মাঝারি সাফল্য পেলেও ২৩টির বেশি প্রকল্প বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়েছে।
তার মধ্যে কিছু ছবি ছিল উচ্চ বাজেটের:

  • Bade Miyan Chote Miyan (₹400 crore budget)

  • Mission Raniganj

  • Ganapath

  • Bell Bottom

  • Cuttputlli (OTT performance সত্ত্বেও theatrical ফিগার দুর্বল)

এইসব ছবির ব্যর্থতা একত্রে বিশাল আর্থিক ক্ষতি তৈরি করেছে।


 কেন ব্যর্থ হলো ছবি? শিল্পবিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভাগনানি পরিবারের ছবিগুলির ব্যর্থতার পিছনে রয়েছে পাঁচটি বড় কারণ—

১. বাজেটের তুলনায় দুর্বল স্ক্রিপ্ট

ভারতীয় দর্শক এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি বুদ্ধিমান। বড় বাজেট আর বড় তারকা মানেই হিট— এই ধারণা আর চলে না।
বছরের পর বছর স্ক্রিপ্টকে গুরুত্ব না দেওয়ার ফলেই বড় ক্ষতি হয়েছে।

২. দর্শকদের চাহিদার পরিবর্তন

OTT–র যুগে হাই-অকটেন অ্যাকশন বা বড় সেট দর্শকদের তেমন আকর্ষণ করছে না— দর্শক গল্প চায়।

৩. ভুল সময় নির্বাচন

বড় উৎসব বা ছুটির সপ্তাহে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। কিছু ছবি ভুল সময়ে মুক্তি পেয়েছে।

৪. অতিরিক্ত VFX ও মার্কেটিং খরচ

উচ্চ বাজেটের চলচ্চিত্রে VFX ও প্রচারণায় অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করা হয়েছে, যা রিটার্ন আনতে পারেনি।

৫. একাধিক ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্প একসাথে নেওয়া

মানুষ বলছে—

“Pooja Entertainment একসাথে খুব বেশি উচ্চ বাজেটের ছবি হাতে নিয়েছিল।”


 রাকুল প্রীত কী বললেন? তাঁর বক্তব্যে কোনও আতঙ্ক নেই

রাকুল বলেন—

“এটা সিনেমা ব্যবসার অংশ। ক্ষতি হলে জীবন থেমে যায় না। আমাদের কাছে মাথার উপর ছাদ আছে, পরিবার আছে— সেটাই বড়।”

তিনি আরও জানান—

 কোম্পানি বন্ধ হয়নি
 গুজব প্রচার হচ্ছে
 বাস্তব ক্ষতি থাকলেও তারা দৃঢ়

রাকুলের এই শান্ত ও পরিপক্ব প্রতিক্রিয়া বলিউড মহলে প্রশংসা পেয়েছে।


 অমিতাভ বচ্চনের উদাহরণ কেন টানলেন রাকুল?

অমিতাভ বচ্চন একসময় Amitabh Bachchan Corporation Ltd (ABCL) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
এই সংস্থা অতিমাত্রায় বিনিয়োগ ও ভুল প্রকল্প বেছে নেওয়ার কারণে বিশাল ঋণে ডুবে যায়।
সেই সময়:

  • বচ্চনের বাড়ি প্রায় নিলামে চলে যায়

  • তারকার ক্যারিয়ারও বিপর্যস্ত হয়

  • পরে সিরিয়াল ও ছবি করে তিনি আবার উঠে দাঁড়ান

রাকুল বলেন—

“বচ্চন স্যারের মতো মহান অভিনেতাও আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে গেছেন। তাই ক্ষতি মানেই শেষ নয়।”


 ভাগনানি পরিবারের কোম্পানি কি সত্যিই বন্ধ? রাকুল কী বললেন

ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছিল—

news image
আরও খবর

“Pooja Entertainment বন্ধ হয়ে গেছে।”

রাকুল সরাসরি বললেন—

“No company is shut.”

তিনি ব্যাখ্যা করেন—

  • খরচ কমানো হয়েছে

  • কর্মী কমানো হয়েছে

  • নতুন ব্যয় পরিকল্পনা করা হচ্ছে

এটি দেউলিয়া হওয়া নয়—
বরং পুনর্গঠন।


 Bade Miyan Chote Miyan: আর্থিক ক্ষতির প্রধান কারণ?

Akshay Kumar ও Tiger Shroff-এর অভিনীত এই ছবির বাজেট ছিল ₹400 crore
কিন্তু ছবিটি বক্স অফিসে তলানিতে গিয়ে ধাক্কা খায়।

ক্ষতি:

  • আন্তর্জাতিক বাজারে সংগ্রহ কম

  • ভারতীয় বাজারে প্রচার প্রত্যাশার তুলনায় কার্যকর হয়নি

  • ডিস্ট্রিবিউটররা ক্ষতির মুখে পড়ে

এই ব্যর্থতা ভাগনানি পরিবারের আর্থিক ক্ষতির বড় অংশ।


 শিল্পবিশেষজ্ঞদের বক্তব্য: বলিউডে আর্থিক ঝুঁকি বাড়ছে কেন?

ভারতীয় চলচ্চিত্র ব্যবসার বিশ্লেষকদের মতে—

 OTT দর্শকের মানদণ্ড পাল্টে দিয়েছে

 মেগা বাজেট ১০–১৫% ক্ষেত্রেই সফল

 তারকা নির্ভরতা কমছে

 কনটেন্ট–ড্রিভেন সিনেমাই ভবিষ্যৎ

 ভুল সিদ্ধান্তের মূল্য কোটি কোটি টাকা

বিশেষজ্ঞদের মতে—

“এক বছরে তিনটি বড় ব্যর্থতা মানেই প্রযোজক সংস্থার জন্য বহু বছরের ক্ষতি।”


 কর্মী ছাঁটাই, অফিস কমানো— বাস্তব অবস্থা কী?

রিপোর্টে জানা যায়—

  • কিছু কর্মীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে

  • স্টুডিওর কিছু অংশ ভাড়া দেওয়া হচ্ছে

  • একাধিক সিনেমার কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে

তবে রাকুল জানিয়েছেন—

“এটি পুনর্গঠন, বন্ধ হওয়া নয়।”


 বলিউডে অর্থনৈতিক সংকট: সামগ্রিক চিত্র

ভাগনানি পরিবার একা নয়।
গত ৫ বছরে ব্যর্থ হয়েছে—

  • Adipurush

  • Laal Singh Chaddha

  • Samrat Prithviraj

  • Zero

  • Thugs of Hindostan

  • Shaandaar

  • 83

এই ব্যর্থতাগুলো বলিউড অর্থনীতিকে নাড়িয়ে দিয়েছে।


 ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: কীভাবে ফিরে দাঁড়াবে ভাগনানি পরিবার?

সূত্র অনুযায়ী—

 বড় বাজেটের ছবি আপাতত বন্ধ
 ছোট, গল্পভিত্তিক ছবি তৈরিতে মনোযোগ
 OTT–র জন্য কনটেন্ট তৈরি
 আন্তর্জাতিক কো–প্রোডাকশন পরিকল্পনা
 বিদেশি ফান্ডিং নিয়ে আলোচনা


 উপসংহার: রাকুলের বক্তব্য বলিউডের আর্থিক বাস্তবতাকে সামনে আনে

রাকুল প্রীত সিং-এর এক বক্তব্যই এখন বলিউডে একটি বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে—

“গ্ল্যামার আর আলো— সবই আছে। কিন্তু ক্ষতির ঝুঁকি? সেটাই সবচেয়ে বড়।”

ভাগনানি পরিবার বর্তমানে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু এটি বলিউডের জন্য নতুন কিছু নয়।
অমিতাভ বচ্চন থেকে শুরু করে অসংখ্য কিংবদন্তি তারকাই এমন সংকটের মুখোমুখি হয়েছেন এবং আবার উঠে দাঁড়িয়েছেন।

Pooja Entertainment–এর ভবিষ্যৎ এখন পুনর্গঠন, কৌশল পরিবর্তন এবং আরও বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।

Preview image