Lenspedia Bangla Logo
  • কলকাতা
  • 30℃ Purba Bardhaman

‘শালি মহব্বত’-এর সেট থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা—মণীশ মলহোত্রার কোন গুণে সবচেয়ে মুগ্ধ সৌরসেনী?

আরবসাগরের পারে মুম্বইয়ে কাজের সূত্রে যাতায়াত এখন সৌরসেনী মৈত্রের জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সেই যাত্রার মাঝেই তিনি যুক্ত হন মণীশ মলহোত্রা প্রযোজিত এবং টিসকা চোপড়া পরিচালিত বহুল আলোচিত ছবি শালি মহব্বত এ, যেখানে তাঁর সহ অভিনেতা রাধিকা আপ্তে, অনুরাগ কাশ্যপ ও দিব্যেন্দু শর্মার মতো নামী শিল্পীরা। কাজ করতে গিয়ে সৌরসেনী সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ হন মণীশের ব্যক্তিত্বে একদিকে তাঁর বিশ্বজোড়া খ্যাতি, অন্যদিকে অবিশ্বাস্য সরলতা, সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ, শেখার আগ্রহ এবং সবার কাজে উৎসাহ দেওয়ার ক্ষমতা। শুটিংজুড়ে মণীশের উপস্থিতি সৌরসেনীর কাছে ছিল এক নীরব শক্তির মতো, যা পুরো দলের কাজকে সহজ করে দিয়েছে। তাঁর সৃজনশীল দৃষ্টিভঙ্গি, রঙ-আলো-চরিত্র নিয়ে ভাবনার গভীরতা এবং নতুন কিছু করার সাহস সৌরসেনীকে আরও অনুপ্রাণিত করেছে। ৫ ডিসেম্বর, তাঁর জন্মদিনে সৌরসেনী জানালেন এক আন্তরিক শুভেচ্ছা মণীশ যেন আরও গল্প বলেন, আরও শিল্প সৃষ্টি করেন এবং নতুন প্রজন্মের পথপ্রদর্শক হয়ে থাকেন। শালি মহব্বত’ তাঁর কাছে তাই শুধু একটি কাজ নয়, বরং এক মূল্যবান অভিজ্ঞতা, যেখানে মণীশ মলহোত্রার মানবিকতা ও শিল্পবোধ তাঁর মনে দীর্ঘদিনের ছাপ রেখে গেছে।


আরবসাগরের পারে তাঁর যাতায়াত বেড়ে গিয়েছে অনেক দিন হলো। কলকাতার ব্যস্ত শহর থেকে মুম্বাইয়ের ঝকঝকে গ্ল্যামারড্রাইভে যাতায়াত এখন সৌরসেনী মৈত্রের জীবনের এক পরিচিত অধ্যায়। কাজের প্রয়োজনে কখনও চরিত্রে ডুবে থাকা, কখনও ফটোশুটের আলো-ছায়া সামলানো, আবার কখনও সভা-মিটিং সবই যেন ক্রমশ তাঁর নিত্যদিনের অংশ হয়ে উঠেছে। আর সেই যাত্রার মাঝেই এসে পড়ল এক নতুন অভিজ্ঞতা, এক নতুন অধ্যায় মণীশ মলহোত্রা প্রযোজিত, টিসকা চোপড়া পরিচালিত ‘শালি মহব্বত’ ছবিটি। ছবিটিতে তাঁর সহ-অভিনেতারা যেমন শক্তিশালী, তেমনই বহুল আলোচিত—রাধিকা আপ্তে, অনুরাগ কাশ্যপ, দিব্যেন্দু শর্মা-সহ আরও বেশ কয়েকজন। এমন একটি ছবিতে কাজ করা একদিকে যেমন সৌরসেনীর কাছে সম্মান, অন্যদিকে চ্যালেঞ্জও কম নয়। আর সেই পুরো অভিজ্ঞতার কেন্দ্রে ছিলেন একজন মানুষ মণীশ মলহোত্রা।

মণীশ মলহোত্রা, নামটাই যেন বলিউডের আলিশান দুনিয়ার সঙ্গে জড়ানো। তাঁর হাতে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য স্মরণীয় লুক, তৈরি হয়েছে আইকনিক চরিত্রের পর্দার সাজ। নব্বইয়ের দশক থেকে আজ পর্যন্ত তিনি শুধু পোশাকশিল্পী নন, ফ্যাশনের এক কিংবদন্তি। হাজারো তারকা আজও তাঁর ডিজাইনের উপর নির্ভর করেন, তাঁর কাজের প্রতি আস্থা রাখেন, তাঁর নন্দনতত্ত্বকে অনুসরণ করেন। সেই মানুষটি যখন প্রযোজকের আসনে বসেন, তখন স্বাভাবিকভাবেই তা এক নতুন আলোচনার জন্ম দেয়। মানুষ ভাবে, কেমন হতে পারে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি? কীভাবে তিনি গল্পকে দেখেন? পোশাকের রঙে যে সৌন্দর্যের ভাষা তিনি সৃষ্টি করেছেন, সিনেমার পর্দায় সে ভাষা কি নতুন কোনো রূপ নেবে? এই সব প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজে পেলেন সৌরসেনী ‘শালি মহব্বত’–এর কাজের অভিজ্ঞতায়।

৫ ডিসেম্বর, মণীশ মলহোত্রার জন্মদিন। সেই বিশেষ দিনে সৌরসেনী নিজের মুম্বই সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরলেন। তিনি বললেন, একজন ব্যক্তির মধ্যে কতরকম গুণ একসঙ্গে কাজ করতে পারে, তা মণীশকে দেখলে বোঝা যায়। প্রথমেই যে বিষয়টি তাঁর নজরে আসে তা হলো মণীশের অনন্য কর্মদক্ষতা। তিনি পোশাকশিল্পী হিসেবে বিশ্বজোড়া খ্যাতি পেয়েছেন, কিন্তু তার পরেও তাঁর আচরণে নেই কোনো অহংকার, নেই কোনো দূরত্ব। বরং তিনি অত্যন্ত আন্তরিক, সংবেদনশীল এবং প্রত্যেকের কাজকে মূল্য দিতে জানেন। শুটিং সেটে তিনি আসতেন সাজানো পোশাকের মতোই নিখুঁতভাবে প্রস্তুত হয়ে—চোখে ভরপুর মনোযোগ, মুখে হাসি, আর হাতে কাজের পরিকল্পনা। সৌরসেনীর কাছে এই অংশটিই ছিল বিস্ময়ের। তিনি ভাবেননি, এত বড় একজন মানুষ এত সহজ, এত মাটির কাছাকাছি এবং এত খোলা মনের হতে পারেন।

মণীশের আর একটি গুণ যা তাঁকে গভীরভাবে ছুঁয়ে গেছে, তা হলো তাঁর শেখার প্রবল ইচ্ছা। বয়স, অভিজ্ঞতা, সাফল্য—কোনো কিছুই তাঁকে থামিয়ে রাখতে পারে না। তিনি সব সময়ই নতুন কিছু চেষ্টা করতে চান, নতুন গল্প বলতে চান, নতুন শিল্পীদের সঙ্গে যুক্ত হতে চান। পোশাক ডিজাইনের বাইরে গিয়ে প্রযোজনায় হাত দেওয়াটাই তাঁর সেই নিরন্তর অনুসন্ধানের প্রমাণ। সৌরসেনী বললেন, মণীশ যেন এমন একজন মানুষ, যাঁর চোখে সবসময়ই স্বপ্ন খেলা করে। তিনি কাজে ডুবে থাকেন, নতুনত্বের খোঁজে থাকেন, সৃষ্টির আনন্দে ভেসে থাকেন। এমন মানুষকে সামনে থেকে দেখা, তাঁর সঙ্গে কাজ করা—এটাই তো একজন অভিনেত্রীর জন্য বড় অভিজ্ঞতা।

টিসকা চোপড়া পরিচালিত ‘শালি মহব্বত’-এর শুটিংজুড়ে সৌরসেনী দেখেছেন মণীশের জটিল কাজকে সহজ করে দেওয়ার ক্ষমতা। কোনো দৃশ্যে আলো যদি কম হয়, মণীশ তা খেয়াল করেন। কোনো পোশাক চরিত্রের সঙ্গে মানালে না, তিনি সঙ্গে সঙ্গে তা পরিবর্তনের পরামর্শ দেন। কখনও তিনি নির্দেশনা দেন, কখনও তিনি নিজেই হাতে ধরে দেখিয়ে দেন। তাঁর কাজের একটা বিশেষত্ব হলো তিনি কখনও চাপ দেন না, কিন্তু সবাইকে নিজের সেরা কাজটা করতে উৎসাহিত করেন। সৌরসেনীর কথায়, সেটে তাঁর উপস্থিতি যেন অদৃশ্য এক শক্তি—যা সবাইকে আরও নির্ভার, আরও মনোযোগী করে দেয়। তাঁর সাজানো পরিবেশে কাজ করাটা মানে যেন সৃষ্টিশীলতার ভিতর দিয়ে হাঁটা।

রাধিকা আপ্তে, অনুরাগ কাশ্যপ, দিব্যেন্দু শর্মা—এই অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করাও সৌরসেনীর কাছে বিশেষ অভিজ্ঞতা। প্রতিটি দৃশ্যে নতুন নতুন শেড, অভিনয়ের সূক্ষ্মতা, আর চরিত্রের বহুমাত্রিকতা তাঁকে আরও পরিণত করেছে। কিন্তু এই পুরো যাত্রায় মণীশ মলহোত্রার নীরব তত্ত্বাবধান ছিল বলেই হয়তো সে অভিজ্ঞতা আরও সুন্দর হয়েছে। তিনি সবসময় শোনেন, পরামর্শ দেন, সাহায্য করেন। এমনকি যেদিন শুটিং কঠিন হয়েছে, সেদিনও তিনি সবার পাশে দাঁড়িয়েছেন এক বন্ধুর মতো।

news image
আরও খবর

জন্মদিনে সৌরসেনী যখন তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, তা ছিল কেবল একটি অভিনন্দন বার্তা নয়—বরং তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং কৃতজ্ঞতার এক আন্তরিক প্রকাশ। তিনি বলেছেন, জীবনে যতদিন এমন মানুষদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ থাকে, ততদিন নিজেকে নতুন করে গড়ার পথও খোলা থাকে। মণীশ মলহোত্রার মতো মানুষরা আসলে শুধু প্রযোজক বা ডিজাইনার নন—তাঁরা অনুপ্রেরণার উৎস। তাঁদের মধ্যেই আছে সৃষ্টির আগুন, স্বপ্নের তীব্রতা, সাহসের আলো। সৌরসেনী বললেন, মণীশ তাঁকে শিখিয়েছেন—কীভাবে একজন শিল্পীকে নিজের সীমা ভেঙে এগোতে হয়, কীভাবে নতুন কিছু শুরু করতে হয়, আর কীভাবে নিজের কাজের প্রতি আজীবন অনুরাগ ধরে রাখতে হয়।

তিনি আরও মনে করিয়ে দিয়েছেন, মণীশের সাফল্য তাঁর পোশাকে নয়, তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিতে। তিনি সৌন্দর্যকে দেখেন আলোর মতো, গল্পকে দেখেন রঙের মতো, আর মানুষকে দেখেন চরিত্রের মতো। তাঁর কাজের প্রতিটি স্তরে লুকিয়ে থাকে শৈল্পিকতার গভীরতম স্পর্শ। যে মানুষ এত বড় পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন নিজের হাতে, তাঁর জন্মদিনে সৌরসেনী তাঁকে জানালেন শুধু অভিনন্দন নয়, বরং তাঁর প্রতি গর্ব এবং শ্রদ্ধার এক দীর্ঘ বার্তা। তিনি লিখেছেন, মণীশ যেন আরও সৃষ্টিতে ডুব দিন, আরও গল্প বলুন, আরও শিল্প সৃষ্টি করুন—কারণ তাঁর প্রতিটি কাজ নতুন প্রজন্মকে শেখায় কীভাবে বড় হতে হয়, কীভাবে স্বপ্ন দেখতে হয়, আর কীভাবে তা সত্যি করতে হয়।

সৌরসেনীর ভাষায়, ‘শালি মহব্বত’-এর সেট ছিল যেন এক শিল্পমন্দির, যেখানে প্রত্যেকে নিজস্ব কাজকে নতুন করে আবিষ্কার করার সুযোগ পেয়েছেন। টিসকা চোপড়ার সংবেদনশীল পরিচালনা, রাধিকাদের গভীর অভিনয়, দিব্যেন্দুর প্রাণবন্ত উপস্থিতি—এ সব মিলেই ছবিটি যেন এক অনুভূতির ক্যানভাস হয়ে ওঠে। আর সেই ক্যানভাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রঙ ছিলেন মণীশ মলহোত্রা—যাঁর তত্ত্বাবধানে ছবিটি পেয়েছে এক অন্য রকম সৌন্দর্য, এক অন্য গভীরতা, এক অন্য শক্তি।

মণীশের জন্মদিন তাই যেন এক উপলক্ষ হয়ে উঠল সৌরসেনীর কাছে তাঁর অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়ার, তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর, তাঁর ব্যক্তিত্বের সেই অনতিক্রম্য দীপ্তিকে তুলে ধরার। শিল্পী থেকে প্রযোজক—এই রূপান্তরই সৌরসেনীর কাছে সবচেয়ে বিস্ময়কর, কারণ তিনি বিশ্বাস করেন, যে মানুষ নিজের প্রতিষ্ঠিত পরিচয়কে ছাড়িয়ে নতুন পরিচয় তৈরি করতে পারে, সেই মানুষই প্রকৃত শিল্পী।

মণীশ মলহোত্রা তাঁর কাজের মাধ্যমে সৌরসেনীকে যেমন মুগ্ধ করেছেন, জন্মদিনে তাঁর প্রতি বার্তায় তেমনই প্রকাশ পেয়েছে সৌরসেনীর উষ্ণতা, কৃতজ্ঞতা এবং স্নেহ। তিনি কামনা করেছেন, মণীশ যেন আরও বহু বছর ধরে বলিউডকে আলোকিত করে রাখেন, আরও গল্প তৈরি করেন, আরও শিল্প সৃষ্টি করেন, আর তাঁর আলো যেন তরুণ প্রজন্মের পথ দেখাতে থাকে।

এভাবেই ‘শালি মহব্বত’-এর শুটিং আর মণীশ মলহোত্রার জন্মদিন মিলেমিশে তৈরি করেছে সৌরসেনীর জীবনের এক বিশেষ অধ্যায়—যেখানে আছে কাজের শিক্ষা, শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা, বন্ধুত্বের উষ্ণতা, আর একটি অসাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্জিত অনুপ্রেরণার অমূল্য ঝুলি।শুটিংজুড়ে মণীশের উপস্থিতি সৌরসেনীর কাছে ছিল এক নীরব শক্তির মতো, যা পুরো দলের কাজকে সহজ করে দিয়েছে। তাঁর সৃজনশীল দৃষ্টিভঙ্গি, রঙ-আলো-চরিত্র নিয়ে ভাবনার গভীরতা এবং নতুন কিছু করার সাহস সৌরসেনীকে আরও অনুপ্রাণিত করেছে। ৫ ডিসেম্বর, তাঁর জন্মদিনে সৌরসেনী জানালেন এক আন্তরিক শুভেচ্ছা—মণীশ যেন আরও গল্প বলেন, আরও শিল্প সৃষ্টি করেন এবং নতুন প্রজন্মের পথপ্রদর্শক হয়ে থাকেন। ‘শালি মহব্বত’ তাঁর কাছে তাই শুধু একটি কাজ নয়, বরং এক মূল্যবান অভিজ্ঞতা, যেখানে মণীশ মলহোত্রার মানবিকতা ও শিল্পবোধ তাঁর মনে দীর্ঘদিনের ছাপ রেখে গেছে।

Preview image