দেহে জলশূন্যতা তৈরি হলে সমস্যা দেখা দেয়। তবে জল পানের পর তার শোষণ অনেক বিষয়ের উপর নির্ভর করে, যেমন শরীরের অবস্থা, পরিমাণ, এবং পানির তাপমাত্রা।
সুস্থ থাকার জন্য আমাদের প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা জরুরি। জল শরীরকে সতেজ রাখে এবং দেহে জলশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে। তবে, জল পানের পর দেহে তা শোষিত হতে কতটা সময় লাগে এবং কীভাবে তা শরীরে কাজ করে, তা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
জল পানের পর, তা খাদ্যনালী দিয়ে পাকস্থলীর দিকে এগিয়ে যায়, কিন্তু মূলত জল শোষিত হয় ক্ষুদ্রান্ত্রে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, জল পানের ৫ মিনিটের মধ্যে তা রক্তে মিশতে শুরু করে। যদিও জল সম্পূর্ণরূপে শোষিত হতে কিছুটা সময় লাগে। এক গ্লাস জল পানের পর তার অর্ধেক শোষিত হতে ১১ থেকে ১৩ মিনিট সময় লাগে, এবং পুরো গ্লাসের জল শোষণের জন্য ৭৫ থেকে ১২০ মিনিট পর্যন্ত সময় প্রয়োজন।
জল শোষণের প্রক্রিয়া বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে। প্রথমত, পান করার সময় পাকস্থলীর কতটা অংশ ভর্তি রয়েছে, তা গুরুত্বপূর্ণ। যদি পেট ভর্তি থাকে, তবে বেশি জল পান করা সম্ভব নয়। এছাড়া, জলের তাপমাত্রা এবং খনিজ উপাদানের উপস্থিতিও শোষণের গতিকে প্রভাবিত করে। বিশুদ্ধ এবং কম খনিজযুক্ত জল দ্রুত রক্তে শোষিত হয়, তবে শর্করা বা খনিজে পরিপূর্ণ জল শোষিত হতে বেশি সময় নেয়।
শরীরে জল শোষণের প্রক্রিয়া প্রায় ৭৫ থেকে ১২০ মিনিট পর সম্পূর্ণ হয়, যখন জল দেহের প্রতিটি অংশে সমানভাবে বণ্টিত হয়। প্রথমে জল কোষের রক্ত এবং দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ (যেমন পাকস্থলী, হৃদপিণ্ড, কিডনি) প্রবেশ করে, এরপর তা পেশি, ত্বক এবং কলারসে পৌঁছে। কিছু সময় পর, শরীর থেকে জল মূত্র এবং ঘামের মাধ্যমে বের হয়ে যায়।
তাই, একসঙ্গে বেশি জল পান করার পরিবর্তে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অল্প অল্প করে জল পান করা বেশি উপকারী। এতে দেহে জলশূন্যতা তৈরি হবে না এবং শরীরে জল শোষণের প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন হবে।