মধ্যপ্রদেশের এক স্কুলে খবরের কাগজে পরিবেশন করা মিড-ডে মিল নিয়ে তীব্র সমালোচনার পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছে। ওই স্কুলের মিড-ডে মিলের দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বরাত বাতিল করা হয়েছে। আপাতত স্কুল কর্তৃপক্ষই নিজেরাই ছাত্রছাত্রীদের খাবার পরিবেশনের দায়িত্ব নিয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের শেওপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খবরের কাগজে মিড-ডে মিল পরিবেশন নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্যজুড়ে। ঘটনাটি ঘটে হুল্লাপুরের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, যেখানে মঙ্গলবার এক ভিডিয়োতে দেখা যায়—ছাত্রছাত্রীরা স্কুলের বারান্দায় সারি দিয়ে বসে খবরের কাগজের উপরেই ভাত, ডাল ও সব্জি খাচ্ছে। ওই ভিডিয়োটি ভাইরাল হতেই প্রশাসন ও রাজনীতির মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্যের বিজেপি সরকারকে একের পর এক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। কংগ্রেস নেতা এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী ঘটনাটির নিন্দা করে জানান, এ ধরনের ঘটনা দেশের শিক্ষা ও শিশুস্বাস্থ্য ব্যবস্থার চিত্রকে কলঙ্কিত করে। বিষয়টি রাজনৈতিক রূপ নিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয় স্থানীয় প্রশাসন।
বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী রামনিবাস রাওয়াত এবং বিজয়পুর ব্লকের মহকুমাশাসক অভিষেক মিশ্র শনিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন। রাওয়াত পরে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে জানান, বর্তমানে স্কুলের পড়ুয়ারা স্টিলের থালায় সঠিকভাবে মিড-ডে মিল পাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, “আমাদের দল ঘটনাস্থলে গিয়ে খাবার পরীক্ষা করে দেখেছে, খাবার এখন ঠিকঠাক ভাবে পরিবেশন করা হচ্ছে। আমিও সেই খাবার খেয়েছি।”
ঘটনার পর প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, মিড-ডে মিল সরবরাহের দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বরাত অবিলম্বে বাতিল করা হয়েছে। আপাতত মিড-ডে মিলের দায়িত্ব স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজেরাই নিয়েছে। পাশাপাশি, ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের অব্যবস্থা বা অবহেলার ঘটনা আর না ঘটে, সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
এই ঘটনার পর শুধু শিক্ষা প্রশাসন নয়, সাধারণ মানুষও ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছেন—“যেখানে শিশুদের পুষ্টির জন্য সরকারের এত প্রকল্প, সেখানে খবরের কাগজে খাবার পরিবেশন কতটা ন্যায্য?” প্রশাসন অবশ্য আশ্বাস দিয়েছে, দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।