রাজধানীতে দূষণের মাত্রা ভয়ানক পর্যায়ে। গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লির বাতাসের গুণমান ‘অত্যন্ত খারাপ’ থেকে নেমে গিয়েছে ‘অত্যন্ত ভয়ানক’ স্তরে, পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।
দিল্লিতে শীতের আগমন স্পষ্ট। রবিবার সকালেই রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে এসেছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে— যা স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ৩.৩ ডিগ্রি কম। শনিবারও তাপমাত্রা ছিল ১২.৭ ডিগ্রি। হিমালয় অঞ্চল থেকে ঠান্ডা হাওয়া নামতে শুরু করায় আবহবিদেরা জানিয়েছেন, ভোরের দিকে এবং সূর্যাস্তের পর থেকেই হাড়কাঁপানো শীত অনুভূত হচ্ছে। মৌসম ভবনের পূর্বাভাস, সোমবার থেকে তাপমাত্রা আরও নামবে, পারদ নামতে নামতে ৯ ডিগ্রির আশপাশে পৌঁছাতে পারে।
তবে শীতের আগমনের আনন্দে ছায়া ফেলেছে ভয়ানক দূষণ। রাজধানীর বাতাসে বিষের মাত্রা দিনকে দিন বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লির বাতাসের গুণমান সূচক (AQI) ‘অত্যন্ত খারাপ’ থেকে নেমে গিয়েছে ‘অত্যন্ত ভয়ানক’ পর্যায়ে। শনিবার যেখানে বেশির ভাগ এলাকায় একিউআই ছিল ৩৫০-এর আশপাশে, রবিবার সকালে তা পেরিয়ে গিয়েছে ৪০০— যা ‘অত্যন্ত ভয়ানক’ স্তরে পড়ে।
কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB)-এর তথ্য অনুযায়ী, রবিবার সকাল ৬টার সময় দিল্লির অন্তত ১২ থেকে ১৫টি এলাকায় একিউআই ৪০০ ছাড়িয়েছে। সবচেয়ে বিপজ্জনক দূষণ ধরা পড়েছে বওয়ানা (৪৩৬), ওয়াজিরপুর (৪৩৬) ও রোহিণী (৪৩৫)-তে। এর পাশাপাশি জহাঙ্গীরপুরী (৪৩৩), বুরাড়ী ক্রসিং (৪৩০), আরকে পুরম (৪২১), নরেলা (৪১৯), আনন্দ বিহার ও অশোক বিহার (৪১৬), আলিপুর (৪১৪), চাঁদনি চওক (৪১০) এবং পঞ্জাবী বাগ (৪১৫)-এর বাতাসও ‘অত্যন্ত ভয়ানক’ পর্যায়ে রয়েছে।
রাজধানীর পাশাপাশি এনসিআর অঞ্চলেও (নয়ডা, গ্রেটার নয়ডা, গাজিয়াবাদ, গুরুগ্রাম) দূষণের মাত্রা উদ্বেগজনক। একাধিক এলাকা ইতিমধ্যেই ‘রেড জ়োন’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এয়ার কোয়ালিটি আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম (EWDS)-এর রিপোর্ট বলছে, দূষণ এখনই কমার সম্ভাবনা নেই; বরং আগামী কয়েক দিন পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
CPCB-এর মানদণ্ড অনুযায়ী, একিউআই ০–৫০ হলে ‘ভাল’, ৫১–১০০ ‘সন্তোষজনক’, ১০১–২০০ ‘মাঝারি’, ২০১–৩০০ ‘খারাপ’, ৩০১–৪০০ ‘অত্যন্ত খারাপ’, আর ৪০১–৫০০ ‘অত্যন্ত ভয়ানক’ হিসেবে গণ্য হয়। বর্তমানে দিল্লি এবং আশপাশের শহরগুলির একাধিক অঞ্চলে সূচক ৪০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে— যা স্বাস্থ্যের জন্য চরম ক্ষতিকর।
বায়ুদূষণ ও ঠান্ডা হাওয়ার মিশেলে দিল্লির আকাশ ঢেকে যাচ্ছে ঘন ধোঁয়াশায়। সকালে সূর্যের আলো ফোটার আগেই শহরের উপর ছড়িয়ে পড়ছে ধূসর আস্তরণ। চিকিৎসকদের মতে, এই পরিস্থিতিতে বয়স্ক মানুষ, শিশু ও শ্বাসকষ্টে ভোগা নাগরিকদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।