বলিউডে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো পাপরাজিদের অমানবিক আচরণকে নতুন করে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। নিকিতিন ধীর ধর্মেন্দ্রের অসুস্থতার সময় গোপনীয়তা লঙ্ঘনের নিন্দা করেছেন, আর ফারাহ খান আলি মায়ের মৃত্যুর পর ব্যক্তিগত রীতি নিয়ে বিতর্কে ব্যথিত হয়েছেন। দু’জনই মনে করিয়ে দিয়েছেন—সেলিব্রিটি হলেও তাঁরা মানুষ, তাঁদের দুর্দিনে প্রয়োজন সহানুভূতি, ক্যামেরা নয়।
বলিউডের দুই সুপরিচিত পরিবার ও তাঁদের ব্যক্তিগত সময়ে ঘটে যাওয়া কিছু সংবেদনশীল ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে গভীর আলোচনায় উঠে এসেছে পাপরাজি বা সেলিব্রিটি-ফটোগ্রাফারদের আচরণ এবং সাধারণভাবে সমাজের মানবিকতার মানদণ্ড। এই দুই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশেষভাবে আলোচনায় এসেছেন অভিনেতা নিকিতিন ধীর এবং জুয়েলারি ডিজাইনার ফারাহ খান আলি। দু’জনের বক্তব্যই একদিকে তীব্র, অন্যদিকে মানবিক আবেগে পূর্ণ। তাঁরা প্রত্যেকে আলাদা পরিস্থিতি থেকে একটাই বার্তা দিতে চেয়েছেন সেলিব্রিটি হলেও তাঁরা মানুষ, তাঁদের পরিবারও মানুষ, এবং তাঁদের ব্যক্তিগত দুঃসময়ে কিছু আচরণ কেবলই অমানবিক ও হৃদয়বিদারক।
নিকিতিন ধীর নিজের অভিজ্ঞতার থেকে বোঝাতে চেয়েছেন পাপরাজি যে ভাবে সেলিব্রিটি পরিবারকে ঘিরে ধরে, শোক বা সংকটের মুহূর্তে যে ভাবে ক্যামেরা তাক করে রাখে, তা যেন মানুষের নয়, শিকারি শকুনের আচরণের সঙ্গে মিলে যায়। তাঁর কথায় তিনি বহুবার মিডিয়ার সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করেছেন, তাঁদের সম্মান দিয়েছেন। কিন্তু সম্প্রতি যখন বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা ধর্মেন্দ্র অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, তখন কিছু পাপরাজি তাঁদের পরিবারের প্রাইভেট সময় রেকর্ড করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়। নিকিতিন বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে কাছ থেকে দেখেছেন কী ভয়ঙ্করভাবে এইসব ভিডিও ধারণ করা হয় যেখানে পরিবারের সদস্যরা মানসিকভাবে চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে আছেন, ভিতরে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলছেন, বাইরে অসংখ্য ভক্ত উদ্বিগ্ন, আর সেই সময়েই কয়েকজন ফটোগ্রাফার নিছক ‘ভিউ’ এবং ‘সংবাদের মূল্য’ বাড়ানোর জন্য সেইসব চিত্র ধারণ করছে। তাঁর অভিজ্ঞতায় এই আচরণ অসহ্য, এবং অনেক দূর পর্যন্ত বেদনাদায়ক।
সাম্প্রতিক আরেক ঘটনায় প্রবীণ অভিনেতা জিতেন্দ্র এক প্রার্থনা সভায় হোঁচট খেয়ে পড়ে যান। এটি একটি দুঃখজনক কিন্তু স্বাভাবিক মানবিক ঘটনা। কিন্তু পাপরাজি সেই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে ভিডিও ধারণ করে একইভাবে ছড়িয়ে দেয়। নিকিতিন বলেন—এটি সম্পূর্ণ অমানবিক, কারণ একজন প্রবীণ মানুষ পড়ে গেলে প্রথমে তাঁকে সাহায্য করা উচিত, তাঁর অবস্থা দেখা উচিত, কিন্তু প্রথম প্রতিক্রিয়া যদি হয় ক্যামেরা অন করা, তাহলে তা কেবলই মানুষের মানবিক অনুভূতি হারিয়ে যাওয়ার চিহ্ন। এই সব ঘটনার মধ্যে তিনি অনুভব করেন যেন চারপাশে মানুষ নয়, শিকারী পাখির ভিড়। তাঁর ভাষায়, পাপরাজি যেন ধীরে ধীরে ‘সংবাদমাধ্যম’ থেকে ‘বিনোদনমূলক শিকারি’ হয়ে উঠছে।
নিকিতিনের ক্ষোভ আসলে শুধু একজন অভিনেতার ক্ষোভ নয়; এটি এমন এক কণ্ঠস্বর, যা বলিউডের অনেকেই মনে মনে ধারণ করেন কিন্তু সরাসরি বলতে দ্বিধা করেন। নিকিতিন, যাঁর বাবা পানকাজ ধীর নিজেও বহুদিন ধরে এই ইন্ডাস্ট্রির সদস্য, জানেন—মিডিয়া ও সেলিব্রিটির সম্পর্ক অনেকদূর পর্যন্ত পারস্পরিক নির্ভরশীল। তবু কিছু সময় চরম মানবিক পরিস্থিতিতে এই সম্পর্কের দায় আছে। তাই তিনি সরাসরি বলতে বাধ্য হয়েছেন যে, এই আচরণ মানবতার সীমা অতিক্রম করছে।
অন্যদিকে জুয়েলারি ডিজাইনার ও সুজান খান ও জায়েদ খানের বোন ফারাহ খান আলিও সাম্প্রতিক দিনগুলোতে একই বিষয়ে গভীর আবেগ প্রকাশ করেন। তাঁর মা, প্রখ্যাত সিনেমা ব্যাকগ্রাউন্ডের জারিন খান সম্প্রতি প্রয়াত হন। ফারাহ মা-কে হারিয়ে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত, আর পরিবারের মানুষরা শেষকৃত্যের আয়োজন করছেন। এমন দুঃসময়ে যা ঘটল, তা তাঁকে আরও ভেঙে দেয়। অনেকেই তাঁর মায়ের শেষকৃত্য নিয়ে প্রশ্ন তুলতে থাকে—কেন তাঁকে দাহ করা হলো, কেন মুসলিম রীতি পালন করা হলো না, কেন পরিবার হিন্দু রীতিতে বিদায় দিল। এই প্রশ্নের প্রচ্ছন্ন অভিযোগ যেন তাঁরা পরিবারের সিদ্ধান্তের মধ্যেও কারো সন্তুষ্টির হিসাব রাখেননি। ফারাহ এ নিয়ে বিস্ময় ও বেদনা প্রকাশ করে বলেন, তাঁর মা জন্মসূত্রে পারসি, পরে মুসলিম পরিবারের সঙ্গে যুক্ত হন, এবং জীবনের শেষ ইচ্ছে ছিল তাঁকে হিন্দু রীতিতে দাহ করা হোক। পরিবার শুধু তাঁর শেষ ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়েছে। কিন্তু অনেকেই সান্ত্বনা জানানোর পরিবর্তে তাঁর পরিচয় বা রীতিনীতিকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরি করেছেন।
ফারাহ এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বুঝেছেন, আজকের সমাজে মানুষের সহানুভূতি কতটা কমে গেছে। মানুষ ব্যক্তিগত জীবনের যন্ত্রণাকে বুঝতে চায় না; বরং তারা খুঁজে বেড়ায় কৌতূহলের জায়গা, খুঁটিনাটি মন্তব্য, ধর্মীয় বা সামাজিক পরিচয়ের জটিলতা। তিনি লিখেছেন—মানুষ কি আজ এমনই হয়ে গেছে? একজন সেলিব্রিটির মা-এর মৃত্যুতেও সমবেদনার বদলে কেউ কেউ শুধু প্রশ্ন করে, নিন্দা করে, আর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে অযথা আলোচনা করে।
ফারাহ আরও ক্ষোভ প্রকাশ করেন ধর্মেন্দ্রের অসুস্থতার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ঘটনায়। তিনি বলেন—ধর্মেন্দ্র তাঁদের পরিবারের খুবই কাছের মানুষ। একজন প্রবীণ মানুষ যখন হাসপাতালে ভর্তি, তখন তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গোপনীয়তা রক্ষা করা প্রয়োজন। কিন্তু সেই সময় এমন ভিডিও প্রকাশ করা হলো, যা পরিবারকে আঘাত করতে পারে। তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট—আজকের দিনে মানুষের ব্যক্তিগত দুঃসময়ে ক্যামেরার উপস্থিতি যেন এক অদৃশ্য হুমকি, এবং সংবাদমাধ্যম কখনও কখনও সেই হুমকিকে আরও উসকে দেয়।
ফারাহ আরও উল্লেখ করেন—মানুষ যখন নিজের জীবনে এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়, তখনই হয়তো বুঝতে পারে পরিবার হিসেবে কী যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়। তাঁর ভাষায়—যাঁরা আজ অন্যের বেদনা নিয়ে উপহাস করছেন বা আলোচনার বিষয় বানাচ্ছেন, তাঁদের নিজের জীবনে যখন এমন সময় আসবে, তখন তাঁরা বুঝবেন যে এই আচরণ কতটা কষ্ট দেয়। তিনি বলেন, “একদিন আপনাদেরও প্রিয় কেউ অসুস্থ হবে, বা কেউ হারাবেন। তখন হয়তো বুঝবেন, কেউ যদি আপনার সেই মুহূর্ত রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়, কেমন লাগে।”
এই দুই ঘটনার মধ্যে এক অদ্ভুত মিল আছে। উভয় ক্ষেত্রেই মানুষ শোক, উদ্বেগ বা যন্ত্রণার সময়টিকে কেন্দ্র করে যেটি আশা করে—সমবেদনা, সমর্থন, নীরবতা, অথবা মানবিক সহানুভূতি—সেটা না পেয়ে বরং পেয়েছে অনধিকার চর্চা, কৌতূহল, এবং কিছুটা শিকার-মনস্ক গা-শিউরে ওঠা ছবি-ভিডিও।
বর্তমান যুগে পাপরাজি সংস্কৃতি অনেকভাবে বদলে গেছে। আগের দিনে পাপরাজি মূলত সিনেমা হলের বাইরে বা সেটের বাইরে ছবি তুলতেন। তাঁদের কাজ ছিল পাবলিক উপস্থিতিতে সেলিব্রিটির ছবি ধরা। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে ক্লিক ও ভিউ-এর লোভে পাপরাজি এখন এমন সব মুহূর্তেও ক্যামেরা তোলে, যেগুলো সম্পূর্ণভাবে ব্যক্তিগত ও পরিবারিক। বিশেষত, হাসপাতাল, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া, ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা শোকের মুহূর্তে ক্যামেরা তোলা এখন এক ধরণের ‘স্কুপ’ হয়ে গেছে। সমস্যা হচ্ছে, সেলিব্রিটিদের জীবনে এটি স্থায়ী প্রভাব ফেলছে—মানসিকভাবে তাঁদের ভেঙে দিচ্ছে।
নিকিতিন ও ফারাহ দু’জনই এই অভিজ্ঞতা থেকে সমাজের কাছে একটাই বার্তা দিতে চেয়েছেন—সেলিব্রিটি হওয়া মানে তাঁরা নিজেদের কষ্ট বা ব্যক্তিগত মুহূর্ত হারিয়ে ফেলবেন, এমন নয়। তাঁদের পরিবার রয়েছে, তাঁদের সম্পর্ক রয়েছে, তাঁরা মানুষ হিসেবেও একই অনুভূতি অনুভব করেন। অসুস্থতা বা মৃত্যু এমন সময়, যখন ক্যামেরা নয়, দরকার পাশে থাকা, মানবিক আচরণ দেখানো, সমবেদনা জানানো অথবা অন্তত নীরব থাকা।
নিকিতিন ধীর বলেন—কেউ যখন দুঃসময় কাটাচ্ছেন, তখন ক্যামেরা তুলে ধরার বদলে তাঁদের সাহায্য করা উচিত। তিনি কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন যেখানে কিছু পাপরাজি তাঁকে জানায়—“স্যার, আমাদেরও কাজ আছে। আমাদেরও ছবি তুলতে হয়।” কিন্তু তিনি যুক্তি দেন—কাজ করতে গিয়ে যদি মানুষ নিজের মানবিকতা হারিয়ে ফেলে, তাহলে সেই কাজের মূল্য কতটুকু? মানুষের ক্ষতির বিনিময়ে করা কোনো কাজ কখনও সম্মানজনক হতে পারে না।
ফারাহ খান আলি তাঁর মায়ের মৃত্যু নিয়ে যে বেদনা প্রকাশ করেছেন, সেখানে তিনি শুধুই ধর্ম বা রীতি নিয়ে আলোচনা করেননি; তিনি বলেছেন মানবিক সম্পর্কের কথা। তাঁর মা ছিলেন পারসি বংশোদ্ভূত, মুসলিম পরিবারের সঙ্গে জুড়ে যেতে গিয়ে তিনি বহু ধর্মের মানুষের ভালোবাসা পেয়েছিলেন। তাই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময় তিনি যে রীতিতে বিদায় নিতে চেয়েছেন, সেটাই পালন করা হয়েছে। কিন্তু কিছু মানুষের প্রশ্ন ও ধারণা তাঁকে এতটাই আহত করেছে যে তিনি অনুভব করেছেন—সমাজ মানুষের বেদনা ভুলে শুধুই বিতর্ক খোঁজে।
এই দুই ঘটনার প্রতিফলন বলিউডই নয়, পুরো সমাজের সামনে একটি প্রয়োজনীয় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে—আমরা কি সত্যিই মানবিক? নাকি আমরা বাস্তব জীবনের সমস্ত অনুভূতি ভুলে গিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার কৃত্রিম দুনিয়ার মতোই প্রতিক্রিয়া দিচ্ছি? আমাদের আচরণ কখনও কখনও এতটাই যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে যে আমরা ভুলে যাচ্ছি মানুষের পরিবার, অনুভূতি, দুঃখ বা জটিলতার কথা।
আজকের পাপরাজি ও সংবাদমাধ্যমের অনেকেই মানবিকতা বজায় রাখেন—এ কথা সত্য। কিন্তু কিছু অংশের আচরণ সেই ইতিবাচক দিকগুলোকে ঢেকে দেয়। এবং যখন বলিউডের পরিচিত পরিবারগুলোর এমন অভিজ্ঞতা হয়, তখন বিষয়টি আরও বেশি আলোচনায় উঠে আসে।
ধর্মেন্দ্র, জিতেন্দ্র—এরা ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসের অংশ। তাঁরা ভক্তদের কাছে শুধু অভিনেতা নন, এক আবেগ। কিন্তু যখন তাঁদের বয়স হয়েছে, পরিবার তাঁদের নিয়ে উদ্বিগ্ন, তখন সামাজিক দায়িত্ব হওয়া উচিত সম্মান দেখানো, তাঁদের শান্তিতে থাকতে দেওয়া। কিন্তু কিছু ফটোগ্রাফার তাঁদের বেদনা ও দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে কন্টেন্ট তৈরি করছে। নিকিতিন ধীর এটাই তুলে ধরেছেন—এই কন্টেন্ট একজন প্রবীণ মানুষের পরিবারের জন্য কতটা নিষ্ঠুর হতে পারে, তা যারা তৈরী করছে তারা হয়তো বুঝতেই চান না।
ফারাহ খান আলির ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও স্পর্শকাতর। কেউ যখন মাকে হারান, তাঁর বিশ্বের কেন্দ্রই বদলে যায়। সেই সময় সামান্য একটি সমবেদনা কথা একজনকে শক্তি দিতে পারে। কিন্তু যদি কেউ সেই মুহূর্তে কৌতূহলের বশে ব্যক্তিগত বা ধর্মীয় প্রশ্ন তোলে, তাহলে সেটি হয়ে ওঠে মানসিক নির্যাতনের মতো।
দু’জনের বক্তব্যের সারমর্ম একটাই—মানুষের আবেগ, শোক ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে সম্মান করতে শেখা উচিত। ক্যামেরা সবকিছু নয়, খবর সবকিছু নয়, ভিউ-এর সংখ্যা সবকিছু নয়। মৃত্যুর সময়, অসুস্থতার সময় একজন মানুষ শুধু মানুষই—তিনি তারকা নন, তিনি সংবাদ নন, তিনি কন্টেন্ট নন। তাঁর পাশে থাকা উচিত মানবিকতার।
সোশ্যাল মিডিয়া, পাপরাজি-সংস্কৃতি এবং দ্রুতগতির সংবাদমাধ্যম আমাদের এমন জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে যে আমরা কিছুটা ভুলে গেছি—মানুষের দুঃসময় ক্যামেরার সামনে নয়, পরিবারের কাছাকাছি থাকা উচিত। তাঁদের কণ্ঠস্বর যেন শোনা যায়—কনটেন্টের জন্য নয়, সহানুভূতির জন্য। এই বার্তাই নিকিতিন ধীর ও ফারাহ খান আলির অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে সামনে এসেছে।
তাঁদের এই সরব অবস্থান শুধুই ব্যক্তিগত ক্ষোভ বা অভিমান নয়; বরং এটি আজকের সমাজের আয়না—যেখানে আমাদের দেখতে হবে আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে আছি। আমরা কি মানুষ হিসেবে অন্য মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ দেখাতে পারি? নাকি প্রতিটি ঘটনায় কেবলই ক্লিক, ভিউ এবং মন্তব্য খুঁজি?
ওঁদের বক্তব্য একটাই—মানুষ হোন। অন্যের দুঃখের প্রতি সংবেদনশীল হোন। যাঁরা রোগে ভুগছেন, যাঁরা মাকে হারিয়েছেন, তাঁদের ক্যামেরা নয়, দরকার স্পর্শ, সমর্থন, এবং নীরব শ্রদ্ধা।