রোজকার ডায়েটে নুন ও চিনি নিয়ন্ত্রণ করা সুস্বাস্থ্যের অন্যতম চাবিকাঠি। প্যাকেটজাত খাবার, কোমল পানীয় বা রেডিমেড স্ন্যাকসে সাধারণত অতিরিক্ত নুন ও চিনি লুকিয়ে থাকে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই এমন খাবার এড়িয়ে চলুন, আর বাড়ির তৈরি সুষম খাদ্যাভ্যাসে গুরুত্ব দিন—যাতে স্বাদও থাকে, স্বাস্থ্যের ক্ষতিও না হয়।
খাবারে নুন-চিনি কম বা বেশি হলেই শুধু রান্নার স্বাদ নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয় শরীরও। পুষ্টিবিদদের মতে, দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অতিরিক্ত নুন ও চিনি থাকা স্বাস্থ্যের পক্ষে মোটেও ভালো নয়। এতে ওজন বেড়ে যাওয়া, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগসহ নানা জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেকে এই ভয়ে পুরোপুরি ‘নো-সল্ট’ বা ‘নো-সুগার’ ডায়েট শুরু করেন, কিন্তু পরামর্শহীনভাবে এমন ডায়েট শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।
নুন শরীরের ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্য বজায় রাখে, স্নায়ু ও পেশির স্বাভাবিক কাজ পরিচালনা করে এবং আয়োডিন সরবরাহের মাধ্যমে থাইরয়েড হরমোন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। অন্যদিকে চিনি শরীরের অন্যতম শক্তির উৎস—একদম বন্ধ করে দিলে ক্লান্তি, ঘুম ঘুম ভাব এবং মনোযোগ কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। অতএব, পরিমিত মাত্রায় নুন-চিনি গ্রহণই স্বাস্থ্য রক্ষার মূল চাবিকাঠি।
পুষ্টিবিদদের মতে, খাবার থেকে এই দুই উপাদান পুরোপুরি বাদ না দিয়ে বরং সচেতনভাবে নিয়ন্ত্রণ করাই শ্রেয়। এজন্য—
1️⃣ খাওয়ার টেবিলে নুন রাখার পাত্র সরিয়ে দিন। পাতে আলাদা করে নুন মেশানো অভ্যাস ত্যাগ করুন।
2️⃣ বাজারচলতি প্যাকেটজাত বা প্রক্রিয়াজাত খাবার কেনার আগে নুন ও চিনির পরিমাণ দেখে নিন। অতিরিক্ত থাকলে এড়িয়ে চলুন।
3️⃣ ঠান্ডা পানীয় বা সোডা জাতীয় পানীয়ের বদলে ডাবের জল, ঘোল বা ভেষজ চা পান করুন—এগুলো শরীরে জল ও খনিজের ভারসাম্য বজায় রাখে।
4️⃣ চিনির বিকল্প হিসেবে স্টিভিয়া ব্যবহার করতে পারেন, আর মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করলে কিশমিশ বা খেজুর খান, তবে পরিমিতভাবে।
5️⃣ সয়া সস্, পিৎজা সস্, চিলি-গার্লিক সস্-এর মতো সস জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে নুন ও চিনি মিশে থাকে—এগুলো যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করুন।
সর্বোপরি, পরিমিত ও ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাসই শরীরকে রাখে সতেজ ও রোগমুক্ত। তাই আজ থেকেই নুন-চিনির পরিমাণে একটু সচেতনতা আনুন—কারণ স্বাদ নয়, সুস্বাস্থ্যের জন্য ভারসাম্যই আসল চাবিকাঠি।