ইন্ডিগোর নতুন পাইলট প্রশিক্ষণ: প্রযুক্তি ও প্রমাণভিত্তিক দক্ষতার যুগে এক বড় পদক্ষেপ নয়াদিল্লি, ৯ নভেম্বর ২০২৫ — ভারতের বৃহত্তম বেসরকারি বিমান সংস্থা ইন্ডিগো (IndiGo) এবার তাদের পাইলট প্রশিক্ষণ ব্যবস্থায় বড়সড় পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছে। সংস্থা জানিয়েছে, তারা প্রচলিত Competency-Based Training and Assessment (CBTA) মডেল থেকে সরে গিয়ে এখন আনছে Evidence-Based Training (EBT) প্রোগ্রাম। এই নতুন উদ্যোগের লক্ষ্য — পাইলটদের শুধু দক্ষ করে তোলা নয়, বরং তাদের সিদ্ধান্তগ্রহণ, মনোযোগ, এবং নিরাপত্তা-কেন্দ্রিক চিন্তাভাবনা উন্নত করা। বর্তমানে IndiGo-র রয়েছে ৫,৩০০-এরও বেশি পাইলট, এবং প্রতিদিন প্রায় ২,৩০০টি ফ্লাইট পরিচালনা করে। সংস্থা জানিয়েছে, আগামী ১২–১৮ মাসের মধ্যেই তারা এই নতুন মডেল সম্পূর্ণভাবে কার্যকর করবে। EBT-এর মূল বৈশিষ্ট্য হলো, প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণভাবে বাস্তব তথ্য ও বিশ্লেষণের ওপর নির্ভর করবে। অর্থাৎ, পাইলটের পারফরম্যান্স ডেটা, সিমুলেটর রিপোর্ট এবং বাস্তব ফ্লাইট তথ্য ব্যবহার করে প্রশিক্ষণ কনটেন্ট তৈরি করা হবে। এই উদ্যোগে থাকবে AI ও Data Analytics-এর ব্যবহার, যা পাইলটদের দুর্বল দিক চিহ্নিত করে উন্নতির সুযোগ তৈরি করবে। ইন্ডিগোর প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা জানান, “আমরা এমন প্রশিক্ষণ দিতে চাই যেখানে অভিজ্ঞতা নয়, ফলাফল হবে মূল মানদণ্ড। বাস্তব পরিস্থিতিতে পাইলট কত দ্রুত ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছে, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।” EBT মডেলে গুরুত্ব দেওয়া হবে — পরিস্থিতি মূল্যায়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতায়, স্ট্রেস ও ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট-এ, মানবিক ত্রুটি হ্রাসে, এবং সামগ্রিক নিরাপত্তা উন্নয়নে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ভারতীয় বিমান চলাচলের ইতিহাসে এক বড় রূপান্তর। কারণ, এটি শুধু প্রশিক্ষণের পদ্ধতি নয়, বরং একটি “ডেটা-চালিত সেফটি কালচার” তৈরি করছে। তবে এই পরিবর্তনে সময় লাগবে। বিপুল ডেটা সংগ্রহ, AI মডেল তৈরি, প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ—সব মিলিয়ে এটি সম্পূর্ণ বাস্তবায়নে এক থেকে দেড় বছর সময় নিতে পারে। IndiGo-র মতে, এই উদ্যোগ শুধু সংস্থার উন্নয়ন নয়, বরং ভারতীয় বিমান চলাচলকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার একটি পদক্ষেপ। ভবিষ্যতে অন্য এয়ারলাইনগুলিও এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারে। সারাংশে, ইন্ডিগোর এই “প্রমাণভিত্তিক প্রশিক্ষণ” উদ্যোগ ভারতীয় আকাশে নিরাপত্তা ও দক্ষতার নতুন অধ্যায় লিখতে চলেছে।
ইন্ডিগোর নতুন যুগে পাইলট প্রশিক্ষণ: প্রমাণভিত্তিক (Evidence-Based) প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামের দিকে ভারতের বৃহত্তম বিমান সংস্থা
নয়াদিল্লি, ৯ নভেম্বর ২০২৫ — ভারতের সবচেয়ে বড় বেসরকারি বিমান সংস্থা ইন্ডিগো (IndiGo) তাদের পাইলট প্রশিক্ষণ ব্যবস্থায় আনতে চলেছে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন। কোম্পানি ঘোষণা করেছে যে, তারা প্রচলিত Competency-Based Training and Assessment (CBTA) মডেল থেকে সরে গিয়ে এখন নিয়ে আসছে Evidence-Based Training (EBT) পদ্ধতি।
এই পদক্ষেপ শুধু প্রশিক্ষণের একটি উন্নত সংস্করণ নয়, বরং এটি বিমান নিরাপত্তা, কার্যক্ষমতা এবং মানবিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের মান উন্নত করার একটি কৌশলগত উদ্যোগ।
বর্তমানে IndiGo প্রতিদিন প্রায় ২,৩০০টিরও বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করে এবং সংস্থাটির পাইলট সংখ্যা ৫,৩০০–এর বেশি। এখন পর্যন্ত প্রশিক্ষণ CBTA-এর মাধ্যমে পরিচালিত হলেও সংস্থা জানিয়েছে, আগামী ১২ থেকে ১৮ মাসের মধ্যে এই নতুন EBT মডেল চালু করা হবে।
ইন্ডিগোর এক সিনিয়র প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা জানিয়েছেন—
“আমাদের লক্ষ্য শুধু পাইলটের প্রযুক্তিগত দক্ষতা বাড়ানো নয়, বরং তাঁর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা, পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া এবং মানবিক ফ্যাক্টরগুলো উন্নত করা।”
এই নতুন প্রশিক্ষণ মডেলে পাইলটদের পারফরম্যান্স নির্ভর করবে তথ্য ও বাস্তব তথ্যভিত্তিক বিশ্লেষণের ওপর। অর্থাৎ, শুধুমাত্র ঘণ্টা বা অভিজ্ঞতার উপর নয়, প্রশিক্ষণের কার্যকারিতা মাপা হবে ফলাফলের ভিত্তিতে।
EBT হলো এমন একটি আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ কাঠামো, যেখানে তথ্য, বিশ্লেষণ ও প্রমাণের ভিত্তিতে পাইলটের দুর্বলতা, আচরণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতা মূল্যায়ন করা হয়।
প্রথাগত প্রশিক্ষণ পদ্ধতিতে যেখানে সবার জন্য একই নিয়মে অনুশীলন হয়, সেখানে EBT প্রতিটি পাইলটের বাস্তব তথ্য ও পারফরম্যান্স ডেটা অনুযায়ী কাস্টমাইজড প্রশিক্ষণ দেয়।
IndiGo পরিকল্পনা করেছে, তারা ফ্লাইট অপারেশন থেকে সংগৃহীত বাস্তব-সময়ের ডেটা, AI (Artificial Intelligence) এবং Data Analytics ব্যবহার করবে। এর মাধ্যমে তারা বুঝতে পারবে কোন পরিস্থিতিতে পাইলট বেশি ভুল করে, কোথায় উন্নতি প্রয়োজন, এবং কীভাবে প্রশিক্ষণ আরও কার্যকর করা যায়।
সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা বাড়ানো — পাইলট যেন দ্রুত ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
পরিস্থিতি সচেতনতা (Situational Awareness) — প্রতিকূল আবহাওয়া বা যান্ত্রিক সমস্যার সময় সঠিকভাবে মূল্যায়ন ও প্রতিক্রিয়া।
মানবিক ত্রুটি কমানো — মানবিক ভুল অনেক দুর্ঘটনার কারণ; EBT সেই ঝুঁকি হ্রাসে সাহায্য করবে।
কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি ও স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট — মানসিক চাপে কাজ করার সক্ষমতা উন্নত করা।
ভারতে বিমান চলাচল দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতি বছর নতুন রুট ও নতুন বিমানের সংখ্যা বাড়ছে। এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পাইলটদের দক্ষতা এবং নিরাপত্তার মানও বাড়াতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, EBT পদ্ধতি এই দিক থেকে একটি বৈপ্লবিক উদ্যোগ। কারণ এটি শুধু প্রশিক্ষণ নয়, বরং একটি ডেটা-চালিত সেফটি কালচার প্রতিষ্ঠা করে।
IndiGo ইতিমধ্যেই বিশ্বের শীর্ষ বিমান সংস্থাগুলোর (যেমন Emirates, Qatar Airways, Lufthansa) মতো প্রশিক্ষণ মডেল অনুসরণ করছে।
IndiGo-র প্রশিক্ষণ টিম জানিয়েছে,
“আমাদের কাছে বিপুল পরিমাণ ফ্লাইট ডেটা রয়েছে। আমরা সেই ডেটাকে ব্যবহার করবো AI-নির্ভর বিশ্লেষণে। এরপর সেখান থেকে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে প্রশিক্ষণ কনটেন্ট তৈরি করা হবে।”
এই প্রোগ্রামে থাকবে:
উন্নত ফ্লাইট সিমুলেটর
রিয়েল-টাইম পরিস্থিতির পুনর্নির্মাণ
AI-ভিত্তিক পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ
ব্যক্তিগত উন্নয়ন ফিডব্যাক
ইন্ডিগো মনে করছে, এর ফলে পাইলট প্রশিক্ষণে গুণগত পরিবর্তন আসবে এবং প্রতিটি পাইলট নিজেকে নির্দিষ্ট পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত করতে পারবে।
EBT মডেল বাস্তবায়নে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে —
বিপুল ডেটা সংগ্রহ ও যাচাই করতে সময় লাগবে।
প্রশিক্ষণ মডেল ডিজাইন করতে প্রায় ১ থেকে ১.৫ বছর সময় লাগবে।
প্রশিক্ষকদেরও নতুন পদ্ধতিতে ট্রেনিং নিতে হবে।
প্রযুক্তিগত বিনিয়োগ ও AI-সিস্টেম উন্নয়ন প্রয়োজন হবে।
তবু IndiGo আত্মবিশ্বাসী যে তারা আগামী দেড় বছরের মধ্যেই সম্পূর্ণভাবে এই নতুন সিস্টেম চালু করতে পারবে।
IndiGo-র এই পদক্ষেপ শুধু তাদের সংস্থার জন্য নয়, বরং সমগ্র ভারতীয় এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটি দৃষ্টান্ত তৈরি করবে। অন্যান্য এয়ারলাইন সংস্থাগুলিও ভবিষ্যতে এই মডেল গ্রহণ করতে পারে।
EBT কার্যকর হলে ভারতীয় পাইলটরা আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ পাবে, যা বিদেশি রুটে তাদের প্রতিযোগিতামূলক করবে।